ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

সংস্কারের এক বছর না যেতেই বেহাল সড়ক

সংস্কারের এক বছর না যেতেই বেহাল সড়ক

গৌরীপুর-বাঞ্ছারামপুর সড়কের তিতাস অংশে খানাখন্দ। চলাচলে দুর্ভোগ সমকাল

বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০০:১৮

গৌরীপুর-বাঞ্ছারামপুর-হোমনা সড়কের তিতাস উপজেলা অংশ বেহাল হয়ে পড়েছে। সংস্কারের এক বছর না যেতেই কার্পেটিং উঠে গেছে। সড়কের খানাখন্দে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করায় কার্পেটিং উঠে গিয়ে রাস্তার এ দশা হয়েছে।
জানা গেছে, গৌরীপুর-বাঞ্ছারামপুর ভায়া হোমনা পর্যন্ত প্রায় ৩১ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়ক রয়েছে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কুমিল্লার মেঘনা, হোমনা, তিতাস, মুরাদনগর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার লোকজন কুমিল্লা শহর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। দাউদকান্দি, তিতাস, হোমনা ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মধ্যে সড়কটি অবস্থিত। এ সড়কে দেড় শতাধিক সংযোগ সড়ক রয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের জন্য সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন সড়কটিতে বাস, ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। বিশেষ করে হোমনা থেকে ঢাকা ও কুমিল্লাগামী দুটি বাস সার্ভিস চালু আছে। ১০ মিনিট পর পর এসব গাড়ি গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে থাকে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের গৌরীপুর অফিসের তথ্যমতে, ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর সড়কটির ১৪ দশমিক ৪০ কিলোমিটার সংস্কারে দরপত্র হয়। কাজটি পায় মোজাহার এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিডেট অ্যান্ড এমডি দেলোয়ার হোসেন বাবুল (জেবি) কোম্পানি। যার ব্যয় ধরা ছিল ১২ কোটি ১২ লাখ টাকা। ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর কাজটি শুরু হয়। ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময় বাড়ানো হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, গৌরীপুর-বাঞ্ছারামপুর-হোমনা সড়কের তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি ব্রিজের উত্তরপাড় থেকে শিবপুর পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এবং গাজীপুর থেকে বাতাকান্দি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের অবস্থা নাজুক। এ ছাড়া রাস্তার বিভিন্ন অংশে কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করায় বছর না যেতেই রাস্তার পিচঢালা উঠে শত শত গর্ত হয়েছে। এসব স্থানে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা।
অটোরিকশার চালক জসিম উদ্দিন ও আকবর আলী জানান, শিবপুর থেকে দেড় কিলোমিটার এবং গাজীপুর থেকে বাতাকান্দির এক কিলোমিটার রাস্তা বেহাল, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এই রাস্তায় চলাচলের কারণে গাড়ির অনেক যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মাত্র কিছুদিন আগে এই রাস্তার কাজ করা হয়েছে।
বারকাউনিয়া গ্রামের রাকিব হোসেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের শিবপুর ও কেশবপুর অংশে প্রায়ই ডাকাতির কথা শোনা যাচ্ছে। গত ২২ ডিসেম্বর রাতে এক আত্মীয় বাড়িতে ফেরার পথে কেশবপুর অংশে ডাকাতের কবলে পড়েন। সড়কের খানাখন্দ জায়গায় গাড়ির ধীরগতি থাকে বিধায় এখানে ডাকাতরা ওত পেতে থাকে।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ঠিকাদার দেলোয়ার হোসেন বাবুলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের গৌরীপুর আঞ্চলিক অফিসের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার ভাষ্য, গৌরীপুর-হোমনা সড়কের কিছু কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু অংশ মেরামত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি অংশও মেরামত করা হবে। ঠিকাদারের জামানত এখনও দেওয়া হয়নি। তাঁকে দিয়েই এ কাজ করানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কাজের মান নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। কারণ কাজ চলাকালে আমি ছিলাম না। এখানে নতুন এসেছি।’
 

আরও পড়ুন

×