নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে অবহেলা করছে প্রশাসন

স্বজনের সন্ধান দাবিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়ক রোববার অবরোধ করা হয় সমকাল
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০০:২০
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত গাজী টায়ারসের কারখানায় লুটপাটের পর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান চেয়েছেন স্বজনরা। গতকাল রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে তারা অভিযোগ করেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানের বিষয়ে অবহেলা করছে প্রশাসন।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা শহরের চানমারী এলাকায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়ক অবরোধ করেন। এতে ব্যস্ত এ সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজট দেখা দেয়। সংবাদ পেয়ে নারায়ণগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাফর সাদিক ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেন। এতে আধাঘণ্টা পর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২৫ আগস্ট রূপগঞ্জে অবস্থিত গাজী টায়ারসে লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। দফায় দফায় লুট চালানোর পর সেখানে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পাঁচ দিন ধরে আগুন জ্বলে যানবাহনের চাকার টায়ার প্রস্তুতকারী এ প্রতিষ্ঠানের কারখানায়। এটির মালিক আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীকের। এ ঘটনার তদন্তে কমিটি করে জেলা প্রশাসন। ১২ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসনে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এ অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৮২ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানানো হয়।
জানা যায়, অগ্নিসংযোগের সময় ওই কারখানাটি বন্ধ ছিল। নিখোঁজ ব্যক্তিদের কেউই কারখানার শ্রমিক নন। এ কারণে ধারণা করা হয়, তাদের সবাই সেখানে লুটপাটে অংশ নেন। লুটপাটকারী অন্য একটি পক্ষ পরে তাদের ভেতরে রেখেই আগুন ধরিয়ে দেয়।
রোববারের বিক্ষোভে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান চেয়ে স্বজনরা বলেন, আগুনের ঘটনার চার মাস পেরিয়ে গেছে। এখনও তাদের কারও সন্ধান দিতে পারেনি সরকারি কোনো সংস্থা। অগ্নিকাণ্ডেই
তাদের মৃত্যু হয়েছে কিনা, সে ব্যাপারেও প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করে কিছু বলছেন না। এ ছাড়া কারখানার ভেতরে দেহাবশেষ আছে
কিনা, তা জানতেও অনুসন্ধান চালানো হয়নি। এ ঘটনায় প্রশাসন অবহেলা করছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
অবরোধ তুলে নেওয়ার পর স্বজনদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আলোচনায় বসেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর হুসাইন। পরে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, গাজী টায়ারসে আগুনের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। তারা ১৮২ জন নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকা তৈরি করেছেন। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে– তা যাচাই-বাছাই করতে পুলিশ সুপারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, গাজী টায়ারসে আগুনের ঘটনায় একটি জিডি হয়েছিল। জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনও দিয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের তদন্ত চলছে। প্রতিবেদনের দেহাবশেষের ডিএনএ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
- বিষয় :
- প্রশাসন ক্যাডার