ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

রংপুরে পরিবহনে রাঙ্গার রাজত্বের অবসান

জেলা মোটর মালিক সমিতিতে রাঙ্গার স্থলে রাজ

রংপুরে পরিবহনে রাঙ্গার রাজত্বের অবসান

মসিউর রহমান রাঙ্গা ও ওয়াসিম বারী রাজ

 রংপুর অফিস

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০০:৫০

রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির ত্রিবার্ষিক নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ওয়াসিম বারী রাজ নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯০ সালের পর এই প্রথম মোটর মালিক সমিতিতে মসিউর রহমান রাঙ্গা নেই। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পরিবহন খাতের ‘মাফিয়া’ রাঙ্গা এখন আত্মগোপনে। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাসহ কয়েকটি অভিযোগে মামলা হয়েছে এই সাবেক এমপির বিরুদ্ধে।

সমিতির নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত কমিশন সূত্র জানায়, আগামী ১১ জানুয়ারি এই নির্বাচন হবে। ১৬টি পদের মধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ আটজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি আটটি পদে ভোট হবে। এসব পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৯ জন। এই নির্বাচনে মোট ২০৩ জন ভোটার। 
১৯৯০ সালে একটি পুরোনো মিনিবাস কিনে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির সদস্য হয়েছিলেন রাঙ্গা। এর পর জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসন থেকে তিনবার এমপি হন। একবার প্রতিমন্ত্রীও হন তিনি। এর পর থেকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মোটর মালিক সমিতি নিজের আয়ত্তে নিয়ে শুরু করেন চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহনেরও প্রেসিডেন্ট হন। 
তাঁকে আইনের আওতায় আনতে সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা রংপুর জেলার পক্ষে মোটর মালিক মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র দুদকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ করা হয়, ১৯৯০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত রাঙ্গা সিলেকশনের মাধ্যমে জেলা মোটর মালিক সমিতিতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন গড়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা আদায় হলেও সমিতিতে নামমাত্র টাকা দিয়ে সব তিনি আত্মসাৎ করেন। 
মোটর শ্রমিক নেতা আক্কাস আলী বলেন, রাঙ্গার সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ ছিলাম। প্রতিনিয়ত আমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হতো। সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম বারী রাজ বলেন, রাঙ্গার পরিবহন সাম্রাজ্যের অবসান হয়েছে। আর কখনোই কাউকে গুন্ডামি, চাঁদাবাজিসহ কোনো ধরনের হয়রানি করতে দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে রাঙ্গার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। 

রংপুর-১ সংসদীয় এলাকার গঙ্গাচড়া থানার ওসি আল এমরান জানান, ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় মসিউর রহমান রাঙ্গার বিরুদ্ধে হত্যাসহ দুটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া রংপুর ও ঢাকায় তার বিরুদ্ধে হয়েছে মামলা। তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। 

আরও পড়ুন

×