মিটার চুরির পর চিরকুট লিখে টাকা দাবি

ছবি: সংগৃহীত
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ | ০২:০১
রাজশাহীর বাঘায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটছে। সেই মিটার ফেরত পেতে মালিকদের গুনতে হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। চোরের রেখে যাওয়া চিরকুটে থাকা বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠালেই মিলছে চুরি যাওয়া মিটার।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত এক মাসের মধ্যে অন্তত সাতজন চালকল মালিকের মিটার চুরি হয়েছে। চোরেরা চিরকুটে ফোন নম্বর রেখে যায়। ওই নম্বরে যোগাযোগ করে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আশপাশে ঝোপ-জঙ্গলে সেই মিটার রেখে যায় চোরেরা। টাকা দিয়ে চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেলেও সংযোগের জন্য ফের পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে টাকা জমা দিতে হয়।
গত ৩১ ডিসেম্বর এক রাতে মনিগ্রাম ইউনিয়নের মনিগ্রাম বাজারের সেলিম রাইস মিল, মাদ্রাসা মোড়ের নান্টু রাইস মিল, তুলসীপুর খেরুর মোড়ের ইমরান রাইস মিল ও সরদার রাইস মিলের বৈদ্যুতিক মিটার চুরি হয়। এর আগে দিঘা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ, বাউসার খাতের সাধুর মোড়ের জাফর আলী ও খাগড়বাড়িয়া গ্রামের মাসুদ আলীর চালকল থেকে একইভাবে মিটার চুরি হয়েছে। সেখানে মিটার বসানো ছিল, সেই জায়গায় পলিথিনে মুড়িয়ে চিরকুট লিখে রেখে যায় চোর। মিটার ফিরে পেতে হলে চিরকুটে দেওয়া বিকাশ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়।
চালকলের মালিক মো. সেলিম হোসেন বলেন, চিরকুটে রেখে যাওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে ১০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠাতে বলা হয়। দরকষাকষি করে ৭ হাজার টাকা পাঠালে মিল থেকে সামান্য দূরে এক জঙ্গলে মিটার রেখে যায় তারা।
ভুক্তভোগী বাবুল আক্তার নান্টু বলেন, সকালে চালকল চালাতে গিয়ে দেখি মিটার নেই। বিষয়টি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে জানালে তারা থানায় অভিযোগ করতে বলে। এর পরপরই পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন এসে মেইন লাইন থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। চোরের দেওয়া নম্বরে টাকা পাঠানোর পর ফের মিটার সংযোগের জন্যও বিদ্যুৎ অফিসে টাকা জমা দিতে হয়েছে।
দিঘা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের মিটার চুরি হয় ১৯ ডিসেম্বর রাতে। তিনিও বিকাশে ৬ হাজার টাকা পাঠিয়ে মিটার ফেরত পান। তিনিও বিদ্যুৎ অফিসে ১১শ ৪ টাকা জমা দিয়ে ফের সংযোগ নিয়েছেন।
বাঘা জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. মনিরুল ইসলাম জানান, মিটার চুরির বিষয়টি জানানোর পর থানায় অভিযোগ করতে বলা হয়। পাশাপাশি গ্রাহককে এ বিষয়ে সচেতন হতে বলা হয়েছে।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে খোঁজ করলেও ভুয়া নাম দিয়ে রেজিস্ট্রেশন হওয়ায় চোর চক্রকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চোরেরা ঝোপ-জঙ্গলে মিটার রেখে যাচ্ছে। তাই আগে টাকা না পাঠিয়ে আশপাশের ঝোপ জঙ্গলে খোঁজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে গ্রাহকদের।