ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

আসামির সঙ্গে পুলিশ কর্তাদের নৈশভোজ, বাধা দেওয়ায় লাঠিচার্জ

আসামির সঙ্গে পুলিশ কর্তাদের নৈশভোজ, বাধা দেওয়ায় লাঠিচার্জ

প্রতীকী ছবি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ | ০৭:৫২ | আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ | ০৭:৫৬

লালমনিরহাটে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আখেরুল ইসলামের সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের নৈশভোজের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের মোস্তফির হাট এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা বাধা দিলে পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ করে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে গভীর রাতে লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

আখেরুল গোকুন্ডা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকার মিরপুর এলাকায় লালমনিরহাটের মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের মিজানুর রহমান নিহতের ঘটনায় হত্যাচেষ্টা মামলা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে মোস্তফি হিমাগারে পুলিশের একাধিক গাড়ি দেখতে পেয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা সেখানে যান। তারা হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি আখেরুল ইসলামের সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নৈশভোজের চিত্র মোবাইল ফোনে ধারণের চেষ্টা করেন। এ সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে তাদের বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে কমপক্ষে ১০ নেতাকর্মী আহত হন। পুলিশ পাঁচজনকে আটকও করে। আহতদের মধ্যে গোকুন্ডা ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান নয়ন ও সদর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব হোসেন সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাত ১টার দিকে আঞ্চলিক মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মুন্সীগঞ্জের আলু ব্যবসায়ী পারভেজ হোসেনের আমন্ত্রণে মোস্তফি হিমাগারে নৈশভোজে অংশ নেন রংপুর মেট্রোপলিটন কমিশনার মজিদ আলী, পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম, সদর থানার ওসি আব্দুল কাদেরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পারভেজের প্রতিনিধি হিসেবে নৈশভোজ তদারক করেন সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও হিমাগারের তত্ত্বাবধায়ক আখেরুল ইসলাম।

গোকুন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলতাব হোসেন বেপারি বলেন, আসামির সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের নৈশভোজ মেনে নেওয়া যায় না। খবর পেয়ে নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করেন। এতে ক্ষেপে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন ও বেধড়ক লাঠিচার্জ করেন। পাঁচজনকে ধরলেও তাদের মণ্ডলের হাট এলাকায় ছেড়ে দেন বলে জানান তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে আখেরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। লালমনিরহাট পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, নৈশভোজে আমি প্রটোকলের দায়িত্বে ছিলাম। আখেরুল ইসলাম হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি, এটি কেউ জানতেন না। তিনি বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় বুধবার সদর থানার ওসি এবং  ডিবির ওসিকে প্রত্যাহার করে লালমনিরহাট পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম ফজলুল হককে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে তাদের।

আরও পড়ুন

×