ফসলি জমির টপ সয়েল বিক্রি, ফসলহানির শঙ্কা

কমলগঞ্জের কৃষ্ণপুর গ্রামে কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কেটে ট্রাক্টরে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছে সমকাল
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫ | ০০:৫৭
রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং তাদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা চক্রের হাত ধরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় তাণ্ডব চালাচ্ছে মাটিখেকোরা। এমনটাই দাবি স্থানীয়দের। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি করায় ফসলহানির শঙ্কা বাড়ছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্টরা।
শীতের শুরু থেকে বিভিন্ন হাওর, সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে শুরু হয়েছে মাটি লুটের উৎসব। এর মাঝে সবচেয়ে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেওয়ার প্রবণতা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এক্সক্যাভেটরের মাধ্যমে এসব জমি থেকে কেটে নেওয়া মাটি ইটভাটা ও বসতভিটার জমি ভরাটের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে কৃষিজমি নষ্টসহ জমির ফসল উৎপাদনের উপযোগিতা হারিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে আর্থিকভাবে সামান্য লাভের আশায় মাটিখেকো চক্রের প্রলোভনে পড়ে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করছেন অনেক কৃষক নিজেই। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাপকহারে কমে যাওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। তারা বলছে, এ অঞ্চলের অধিকাংশ জমিই উর্বর পলিমাটিসমৃদ্ধ। এসব জমিতে বছরে দুটি মৌসুমে ধান রোপণ করা হয় আউশ ও আমন। তবে এভাবে ফসলি জমি নষ্ট করা হলে ভবিষ্যতে সংকটের মুখে পড়বে।
উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে দুই ও তিন ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে বিক্রির হিড়িক পড়েছে। বড় বড় ট্রাকে এসব মাটি পরিবহনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তাঘাটও। নানা দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে এসব রাস্তায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিছু রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধির ছত্রছায়ায় স্থানীয় মাটি ব্যবসায়ীদের একটি চক্র প্রতি বছরের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে মার্চ পর্যন্ত মাটির ব্যবসা করেন। তারা কৃষকদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে জমির এক থেকে দেড় ফুট গভীর পর্যন্ত মাটি কিনে নিয়ে চড়া দামে ইটভাটায় বিক্রি করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, টপ সয়েল জমির প্রাণ। জমির ওপর থেকে ৬ ইঞ্চিই হলো টপ সয়েল। ওই অংশেই থাকে মূল জৈবশক্তি। কৃষকরা জমির টপ সয়েল বিক্রি করে নিজেদের পায়ে কুড়াল মারছেন।
- বিষয় :
- ফসলি জমি