স্ত্রীর মর্যাদা চাওয়ায় সাকিরনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়: পুলিশ

গ্রেপ্তার তিনজন
খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫ | ১৯:৫৮
খুলনার তেরখাদা থেকে গতকাল রোববার উদ্ধার করা মরদেহের পরিচয় মিলেছে। নিহত নারীর নাম সাকিরন বেগম (৪৫)। স্ত্রীর মর্যাদা ও টাকা ফেরত চাওয়ায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার স্বামী আনিচ সরদার ও দ্বিতীয় স্ত্রী আঙ্গুরা বেগমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তেরখাদা থানা পুলিশ জানায়, গতকাল রোববার সকালে খুলনার তেরখাদার বিজয়নগর গ্রামের একটি কলাবাগান থেকে অজ্ঞাতপরিচয় নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তার পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে রোববার রাতে নড়াইল জেলার কালিয়া থানা এলাকা থেকে স্বামী আনিচ সরদার, তার দ্বিতীয় স্ত্রী আঙ্গুরা বেগম ও আকছির সরদারকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ২০০৮ সালে সাকিরন বেগমের স্বামী মারা গেলে তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি খুলনা নগরীর বয়রা এলাকায় তার ভাইয়ের বাসায় থাকতেন। ২০১৭ সালে কালিয়া এলাকার আনিচ সরদারের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৮ সালে আনিচ তাকে বিয়ে করেন। পরে আনিচ তাকে সৌদি আরবে পাঠানোর কথা বললে তিনি রাজি হন। তার কাছে গচ্ছিত টাকা দিয়ে ২০১৯ সালে সাকিরন সৌদি আরবে যান। সৌদি থাকা অবস্থায় আনিচকে বিভিন্ন সময় মোট ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা পাঠান সাকিরন।
পুলিশ আরও জানায়, ২০২০ সালে সাকিরন দেশে ফিরে জানতে পারেন আনিচ আঙ্গুরা বেগমকে বিয়ে করেছেন। তিনি আনিচের কাছে স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করেন। কিন্তু আনিচ তাকে অস্বীকার করেন এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। বিষয়টি সাকিরন তার ভাইসহ স্থানীয় লোকজনকে জানালে তাদের মধ্যস্থতায় আনিচ গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি ৩ লাখ টাকা ফেরত দেবে বলে অঙ্গীকার করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার বিকেলে সাকিরন বেগম টাকা নেওয়ার জন্য নড়াইল জেলার কালিয়া থানা এলাকায় আনিচ সরদারের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। রাতে সাকিরনের মেয়ে তানজিলা আক্তারকে আনিচ সরদার ফোন করে জানান যে, সাকিরনকে আনিচের ভাই, মা, স্ত্রী ও শ্বশুর মারধর করেছেন। তাকে এসে না নিয়ে গেলে তারা খুন করে ফেলবে। তারপর থেকে সাকিরনের মোবাইল ফোন ছিল। রোববার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার হয়।
- বিষয় :
- খুলনা
- হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন
- মরদেহ উদ্ধার