ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

পুলিশের তিন শাখার টানাটানি, ৫ ঘণ্টা পর উদ্ধার হলো লাশ

পাকশীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ থেকে পড়ে নারীর মৃত্যু

পুলিশের তিন শাখার টানাটানি, ৫ ঘণ্টা পর উদ্ধার হলো লাশ

উদ্ধার করা লাশ

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৮:০৪ | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৮:২২

শুক্রবার বেলা ১টা। খুলনা থেকে ঈশ্বরদী হয়ে ঢাকায় চলাচলকারী আন্তঃনগর চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন পাকশীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পার হচ্ছিল। এ সময় এক নারী ট্রেন থেকে সেতুর নিচে পড়ে মারা যান। ঘটনার পর লাশটি ঈশ্বরদী থানার অধীন পাকশী ফাঁড়ি, রেলওয়ে নাকি নৌপুলিশ উদ্ধার করবে, তা নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে টানাটানি শুরু হয়।

পুলিশের এ টানাটানিতে কেটে যায় ৫ ঘণ্টা। ততক্ষণ সড়কে পড়ে ছিল লাশটি। প্রথমে ঘটনাস্থলে পাকশী ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা গেলেও উদ্ধার করেননি। তাদের ভাষ্য, স্থানটি রেলওয়ের হওয়ায় তারা লাশ উদ্ধার করবে। খবর পেয়ে ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থল যায়।

তাদের দাবি, জায়গাটি রেলওয়ের হলেও পদ্মা নদীর সীমানার মধ্যে থাকায় এ দায়িত্ব নৌপুলিশের। তারাও লাশ উদ্ধার না করে চলে যায়। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এভাবে সড়কে লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার পাশাপাশি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। 

সন্ধ্যা ৬টার দিকে নৌপুলিশের একটি দল মরদেহটি উদ্ধার করে। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় পুলিশের তিন শাখার দায়িত্ব নিয়ে টানাটানিতে এভাবে ৫ ঘণ্টা পর দুর্ঘটনায় নিহত নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে লক্ষ্মীকুণ্ডা নৌপুলিশের একটি দল এটি উদ্ধার করে। 
নিহত নারীর কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল শনিবার আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে নারীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

হার্ডিঞ্জ ব্রিজটি রেলওয়ের হলেও যেখানে মরদেহ পড়ে ছিল, সেটি নদী এলাকা বলে জানিয়েছেন ঈশ্বরদী থানার আওতাধীন পাকশী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাকিউল ইসলাম। তিনি বলেন, এটি রেলওয়ে অথবা নৌপুলিশের দায়িত্ব।

রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কিশোর কুমার দত্ত বলেন, রেললাইন বা রেল সেতুর ১০ মিটার দূরে যদি কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলে তা রেলওয়ে পুলিশের আওতায় থাকে না। তখন তা থানা বা পুলিশের অন্য বিভাগের আওতায় চলে যায়। মরদেহ ১০ মিটারের বেশি দূরত্বে থাকায় এটি উদ্ধারের দায়িত্ব তাদের নয়।

লাশ উদ্ধারের পর ঈশ্বরদী নৌপুলিশের ইনচার্জ ইমরান মাহমুদ তুহিন বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, নারীর মরদেহ থানা পুলিশ বা রেলওয়ে পুলিশ উদ্ধার করবে। পরে জানতে পারি, আমাদের উদ্ধার করতে হবে। তাই বিকেলে নৌপুলিশের একটি দল পাঠানো হয়। ৬টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’ 

আরও পড়ুন

×