ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ঈশ্বরদী ও নন্দীগ্রামে ৫৩ চালকলের নিবন্ধন বাতিল

ঈশ্বরদী ও নন্দীগ্রামে ৫৩ চালকলের নিবন্ধন বাতিল

প্রতীকী ছবি

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি ও নন্দীগ্রাম (বগুড়া) সংবাদদাতা

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ০৫:০৫

গত আমন মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ না করায় ঈশ্বরদীর ৪৪টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করেছে খাদ্য বিভাগ। বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহিনুর আলম।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, উপজেলার ১৪৩টি চালকলের মধ্যে চুক্তির আওতায় এসেছিল ৯৯টি। এর মধ্যে ৮৩টি চালকল চুক্তি অনুযায়ী, ১৬টি আংশিক ও ৪৪টি একফোঁটা চালও সরবরাহ করেনি। চলতি মৌসুমে ঈশ্বরদীতে মোট সংগ্রহ হয়েছে ৪ হাজার ৬৪৩ টন চাল, যা চুক্তির ৬৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। চুক্তির আংশিক চাল সরবরাহ করা চালকলগুলোর জামানতও অনুপাতে বাতিল করা হয়েছে।

লাইসেন্স বাতিল হওয়া একাধিক চালকল মালিক দাবি করেছেন, নানা জটিলতায় তাদের পক্ষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। তবে জটিলতা কী তা স্পষ্ট করেননি তারা।

চালকল মালিক ইমদাদুল হক বলেন, মিলের যন্ত্রাংশে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সময়মতো মেরামত করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া অনেক চালকলে শ্রমিক সংকট ছিল। এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় না নিয়ে হঠাৎ করে লাইসেন্স বাতিল করা অন্যায় হয়েছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহিনুর আলম বলেন, যেসব চালকল কোনো চুক্তি করেনি কিংবা সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। সরকারি খাদ্যগুদামে খাদ্যশস্য সরবরাহ একটি দায়িত্বশীল কাজ। এতে অবহেলার সুযোগ নেই।

বগুড়ার নন্দীগ্রামে ৯টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাজেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় লাইসেন্সভুক্ত মোট ১৫টি চালকল রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি চালকল মালিক সরবরাহের জন্য চুক্তি করেন। বাকি ৯টি এ চুক্তি না করায় তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।

নন্দীগ্রামে আমন মৌসুমে ৪৭ টাকা কেজি দরে ৬৭২ টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যে মালিকদের সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের আহ্বান করা হয়। এতে সাড়া দিয়ে ছয় চালকল মালিক ৩৪২.৪৫০ টন চাল সরকারি খাদ্যগুদামে সরবরাহের চুক্তি সম্পাদন করেন। এর মধ্যে একজন চাল সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বাকি ৯টির মালিক চুক্তি না করায় তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়।

নন্দীগ্রাম চালকল মালিক সমিতির সভাপতি বদরুদ্দোজা আল-তৌফিক বলেন, ‘আমরা ক্ষুদ্র মিলার। সরকারি চাল সরবরাহের শর্ত ও সময়সীমা অনেক কঠোর। কেজিতে তিন টাকা লোকসান দিয়ে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করেছি। আমরা সরকারকে সব সময় সহযোগিতা করতে চাই। বাস্তবতা বিবেচনা করে সময় ও সুযোগ দিলে ভালো হয়।’

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাজেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম রোধে কঠোর নজরদারি থাকবে।

আরও পড়ুন

×