ঘরবাড়ি ভাঙল প্রশাসন কাঁদলেন বাসিন্দারা

বাড়ি ভেঙে দেওয়ায় কান্না থামছে না আল মামুনের। শনিবার শ্রীপুরের তালতলী এলাকায় সমকাল
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ০১:০১
গাজীপুরে শ্রীপুরে বনের জমিতে গড়ে তোলা বাড়িঘরসহ ৫৬টি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। গতকাল শনিবার সকালে শুরু হওয়া এ অভিযান চলে দিনভর। এ সময় বন বিভাগের সাতখামাইর রেঞ্জের সাইটালিয়া, তালতলী, পেলাইদ ও মুরগি বাজার এলাকা থেকে চার একর জমি উদ্ধার করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য, উদ্ধার জমির দাম প্রায় ২০ কোটি টাকা।
অভিযান চালানোর সময় বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই স্থাপনা উচ্ছেদ না করার জন্য অনুরোধ করেন। ভেঙে ফেলা বাড়িঘরের মধ্যে বেশ কয়েকটি বেশ পুরোনো। কয়েক প্রজন্ম ধরে সেখানে বসবাস করেছেন তারা। এসব পরিবারের অনেককে কাঁদতে দেখা গেছে। ভাঙার দৃশ্য দেখে কেউ কেউ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
বহু বছর ধরে তালতলীর বনের জমিতে বসবাস করে আসা শারীরিক প্রতিবন্ধী আব্দুল্লাহ আল মামুনের ভাষ্য, মানবিক দিক বিবেচনা করে হলেও বসতবাড়িগুলো রেখে যেতে পারত। যেসব বাড়িঘর নতুন করা হয়েছে, সেগুলো ভাঙলে আপত্তি ছিল না। এখন তারা কোথায় যাবেন? এসব বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
একই এলাকার রুহুল আমিনের দাবি, জীবনের সব উপার্জন দিয়ে বাড়ি করেছেন। প্রশাসনের অভিযানে তা শেষ হয়ে গেল।
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান রিপনের ভাষ্য, বনের জমি উদ্ধারের আগে বাসিন্দাদের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য কয়েক দফা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। লিফলেটও বিতরণ করা হয়েছে। সর্বশেষ মাইকিং করা হয়। কিন্তু তাদের অনেকেই স্থাপনা সরিয়ে নেননি। অনেকে আংশিক সরিয়েছেন। এসব স্থাপনার অনেকগুলোই ৫ আগস্টের পর গড়ে তোলা।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ইউএনও ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, চার একর বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। এতে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবির প্রায় ৩০০ সদস্য অংশ নেন।
ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বশির আল মামুন বলেন, ৫ আগস্টের পরপরই বনভূমি দখলের মহোৎসব শুরু হয়। বনের গাছপালা কেটে হাজার হাজার স্থাপনা নির্মাণ করেছিল কয়েকটি চক্র। পর্যায়ক্রমে বনের সব জমি দখলমুক্ত করা হবে।
- বিষয় :
- প্রশাসন