বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা শিক্ষকদের

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার শিক্ষক-শিক্ষার্থী সংহতি ব্যানারে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে অংশ নেন তারা -সমকাল
বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৫ | ০১:১১ | আপডেট: ০৯ মে ২০২৫ | ০৭:৩৩
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শারমিনের পদত্যাগের এক দফা আন্দোলনে এবার যুক্ত হলেন শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের সংহতি সমাবেশে যোগ দিয়ে আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানান তারা। সংহতি সমাবেশে উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে যোগ দেন শিক্ষকরা। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
সংহতি সমাবেশে শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন–ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিন, কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার, সহকারী অধ্যাপক উন্মেষ রায়, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এটিএম রফিকুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিক, সাদেকুল ইসলাম, মোহসীনা হক, হারুন অর রশীদ, খাদিজা বেগম, মোস্তাকিম রহমান প্রমুখ।
সহযোগী অধ্যাপক ও সাবেক প্রক্টর ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রক্টর থাকাকালীন উপাচার্য ড. শুচিতা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যে মামলা দিয়েছেন, তা আমি জানতাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র অধ্যাপক মুহসিনকে সিন্ডিকেট থেকে অব্যাহতি দিতে তিনি যে ভাষায় চিঠি দিয়েছেন, তা আমরা মানতে পারছি না।
বাংলা বিভাগের প্রধান উন্মেষ রায় বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ড. মুহসিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রথম প্রতিবাদ করেছেন। আন্দোলন শেষে যিনি উপাচার্য হিসেবে এলেন, তিনি ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা করলেন। অথচ আওয়ামী লীগেরও সাহস হয়নি ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার।
অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিন বলেন, একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সভা থেকে আমাকে বেআইনি ও সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমাকে ‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে অপমানজনকভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অন্যায়। এ ধরনের আচরণ প্রশাসনিক দমননীতির স্পষ্ট প্রমাণ।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে গতকাল ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত লাইব্রেরিয়ান পদত্যাগ করেছেন। এর আগে আরও তিনজন শিক্ষক প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এ ছাড়া উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ১৫ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, শুক্রবার গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ভর্তি পরীক্ষায় উপাচার্যের উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক নয়, তাই অবাঞ্ছিত উপাচার্যকে কোনোভাবেই ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
সোমবার উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবির আন্দোলন শুরু হয়। এর মধ্যে উপাচার্যসহ সব দপ্তরে তালা মেরে প্রশাসনিক শাটডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। উপাচার্যের বাসায় তালা মেরে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
- বিষয় :
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান