ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

জিআই সনদ

ভিন্ন স্বাদের হাজরাপুরী লিচুর স্বীকৃতি

ভিন্ন স্বাদের হাজরাপুরী লিচুর স্বীকৃতি

মাগুরা সদর উপজেলার হাজরাপুরের লিচু। বৈশিষ্ট্য ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এ লিচু জিআই পণ্যের সনদ পেয়েছে সমকাল

 মাগুরা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫ | ০১:৪৬ | আপডেট: ১১ মে ২০২৫ | ০৭:৩৮

মাগুরা সদর উপজেলার হাজরাপুরের লিচু গুণগত মানে অনন্য। বৈশিষ্ট্য ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এ লিচু জিআই পণ্যের সনদ পেয়েছে। ২০২৩ সালে মাগুরা জেলা প্রশাসক এ লিচুকে জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) পণ্যের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। সম্প্রতি শিল্প মন্ত্রণালয় এ স্বীকৃতির সনদ দিয়েছে। 
কৃষি বিভাগ, লিচু চাষিসহ সংশ্লিষ্টরা জানান, অন্য লিচুর চেয়ে হাজরাপুরী লিচুর পুষ্টি ও গুণগত মান ভালো। এগুলো অপেক্ষাকৃত রসালো ও ভিন্ন স্বাদের। টক, মিষ্টিসহ রসালো এ লিচু মাগুরাসহ সারাদেশে বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া আগাম জাত হওয়ায় এ লিচুর দামও বেশি। 

উপজেলার ইছাখাদা গ্রামের লিচু চাষি কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বছর লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। হাজরাপুরী লিচু আগাম জাতের। এ কারণে কৃষকরা লিচু বিক্রি করে অধিক লাভবান হচ্ছেন। অন্য জেলার চেয়ে এ লিচু ১৫ থেকে ৩০ দিন আগে বাজারে তোলা যায়। হাজরাপুর গ্রামের আবু জাফর জানান, তিনি ধান-পাটের চাষ করতেন। পরে লিচু চাষ শুরু করেন। এখন সফল লিচু চাষি। বর্তমানে তার চারটি বাগান। এ বছর ৫ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেছেন।

বিরপুর গ্রামের ওসমান মোল্লা, সাত্তার মিয়া, বিপুল কুমারসহ একাধিক লিচু চাষি জানান, তাদের প্রত্যেকের এক থেকে একাধিক লিচুবাগান রয়েছে। বাগান থেকে তারা আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায় প্রতি হাজার লিচু বিক্রি করছেন। খালিমপুর গ্রামে লাড্ডু মিয়া জানান, তিনি ঢাকা থেকে আসা এক ব্যাপারীর কাছে দুটি বাগান তিন লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন।

গতকাল শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজরাপুরের ইছাখাদা বাজারে লিচু ব্যাপারীরা জড়ো হয়েছেন। ঢাকা থেকে আসা আব্দুর রহমান জানান, তারা মাগুরা থেকে হাজরাপুরী লিচু কিনে তা ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করছেন। মান অনুযায়ী বাগান থেকে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকায় প্রতি হাজার লিচু কিনছেন। ঢাকায় তা ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। 

হাজরাপুরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, ইউনিয়নে প্রায় তিন হাজার লিচুবাগান আছে। আগাম জাত ও ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকরা তা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ নানা সহযোগিতা করছে। 

মাগুরা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক লতা ইসলাম জানান, রসে ভরা এ লিচু গুনেমানে অতুলনীয়। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ, যা অন্য লিচুর চেয়ে ভালো। মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক তাজুল ইসলাম জানান, ইউনিয়নে ৬৬৯ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। কৃষকরা ৫০-৫৫ কোটি টাকার লিচু বিক্রি করতে পারবেন।

জেলা প্রশাসক আহিদুল ইসলাম বলেন, স্বীকৃতি চেয়ে ২০২৩ সালে শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন। গত ৩০ এপ্রিল হাজরাপুরী লিচু জিআই সনদ পায়। 

আরও পড়ুন

×