চোরতন্ত্রের ব্যবস্থা শেখ মুজিবের সময় থেকে শেখ হাসিনার সময় পর্যন্ত গড়িয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমেদ

ছবি: সমকাল
খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫ | ২৩:৩৩ | আপডেট: ১৬ মে ২০২৫ | ২৩:৩৪
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের লিগেসি যেটা আমি সবসময় বলি- আওয়ামী লীগের ইতিহাস একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের ইতিহাস। সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসন দূরীভূত করার ইতিহাস। এই যে চোরতন্ত্রের যে ওয়ারেশি ব্যবস্থা, সেটা শেখ মুজিবের সময় থেকে শেখ হাসিনার সময় পর্যন্ত গড়িয়েছে।’
তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রবঞ্চনামূলক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ফলে রাষ্ট্রের দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। তারা গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা নষ্ট করেছে। শেখ হাসিনার সময় বিশেষ কেন্দ্রীভূত সরকার তৈরি হয়েছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য বহু জীবন দিতে হয়েছে। সেরকম পরিস্থিতি থেকে এই জাতিকে মুক্ত করার জন্য শহীদের যে রক্ত; তার রক্তের যে প্রত্যাশা এবং আকাংখাকে তুলে ধরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যকে শক্তিতে রূপান্তর করে সবার আগে বাংলাদেশ এই নীতি আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের ১৫-১৬ বছরের ফ্যাসিবাদের সময়ের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রণয়নের জন্য অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে- যদি আওয়ামী লীগের ওই সময়ে শুধুমাত্র ট্যাক্সের ক্ষেত্রে যে অপব্যবহার দুর্নীতি করা হয়েছে তা যদি অর্ধেকও করা হতো তাহলে আমাদের শিক্ষা বাজেট ডাবল করা যেতো এবং হেলথ বাজেট তিনগুণ করা যেতো।’
সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের এক প্রশ্নের উত্তরে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘৩১ দফা রাজনৈতিক মহাকাব্য। নেতাকর্মীরাই ৩১ দফার অ্যম্বাসেডর। ৩১ দফাকে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই অগ্রনী ভূমিকা পালন করবেন।’
সেমিনারে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, ‘কোনো সংবিধানই মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে না, যদি রাজনৈতিক শক্তি না চায়। রাজনীতিতে ভালো মানুষ-ভালো নেতৃত্ব আসলেই মৌলিক অধিকার রক্ষা সম্ভব। তরুণ প্রজন্মের জন্য এখন রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ভালো সময়। গত ১৬-১৭ বছর ভালো মানুষ যেনো রাজনীতিতে না আসতে পারে সে ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনের উপস্থাপনায় বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্রের মেডিকেল ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলাইনার সহযোগী অধ্যাপক আজিজুল হক, বিডিজবসের প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর, ডিডব্লিউ একাডেমি জার্মানির রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও প্রভাষক মারুফ মল্লিক, চিন্তক ও জবান সম্পাদক রেজাউল করিম, এএমজেড হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট সায়েম মোহাম্মদ, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম খন্দকার, শিখোর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীর চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের সহযোগী অধ্যাপক তৌফিক জোয়ার্দার।
সেমিনারে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
তারুণ্যের সমাবেশ শনিবার
শনিবার বিকেল ৩টায় খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশের আয়োজন করেছে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষের এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে।
ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো প্রস্তুতি সভা, নগরীতে পোস্টারিং, মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করেছে।
- বিষয় :
- বিএনপি
- সালাউদ্দিন আহমেদ
- খুলনা