১৬ মামলার আসামির দু’চোখ থেতলে দিল প্রতিপক্ষ

রাসেল হাওলাদার
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫ | ০৯:২৩
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে রাসেল হাওলাদার (২৭) নামে ১৬ মামলার আসামির দুই চোখ থেতলে দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। ম্যাগনেট গ্রুপের সদস্যদের এতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও তারা অস্বীকার করেছেন। গত মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার বাঘরা ইউনিয়নের মাগডাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সময় গুলির শব্দ পেয়ে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন গিয়ে রাসেলকে উদ্ধার করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি উপজেলার রুদ্রপাড়া গ্রামের প্রয়াত হাশেম হাওলাদারের ছেলে। ঘটনার পর চেষ্টা করেও রাসেল ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের আমল থেকে পূর্ব বাঘরা গ্রামের মেজবাহ উদ্দিন ম্যাগনেটের নেতৃত্বে গড়ে উঠে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের ঘনিষ্ঠ ম্যাগনেট ও তাঁর বাহিনীর সদস্যরা নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। এলাকায় তারা পরিচিতি পায় ‘ম্যাগনেট গ্রুপ’ নামে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রাসেল গ্রুপের অন্যতম সদস্য। সম্প্রতি ছিনতাইয়ের সামগ্রী ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ হলে তিনি পৃথক গ্রুপ তৈরির চেষ্টা করেন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ম্যাগনেটসহ অন্যরা। এর জেরে মঙ্গলবার রাতে তাঁকে একা পেয়ে মাগডাল গ্রামের একটি মেহগনি বাগানে নিয়ে যান। সেখানে গাছের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে তাঁর দুই চোখ থেতলে দেন তারা।
একই সঙ্গে রাসেলের দুই পায়ের হাঁটুর নিচে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এ অভিযোগ অস্বীকার করে ম্যাগনেট গ্রুপের প্রধান মেজবাহ উদ্দিন ম্যাগনেট মোবাইল ফোনে বলেন, ‘এর সঙ্গে আমি জড়িত না। ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। ঘটনাটি ঘটিয়েছেন স্থানীয় উত্তেজিত লোকজন। গ্রামের মানুষ রাসেলকে গণপিটুনি দিয়েছেন।’
ম্যাগনেট গ্রুপের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিরোধের জেরে গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জানিয়ে শ্রীনগর থানার ওসি শাকিল আহমেদ বলেন, রাসেলের পক্ষ থেকে এখনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। হত্যা, ছিনতাই, অস্ত্রসহ তাঁর বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা রয়েছে।
জেলার পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, আধিপত্য ও অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে এ ঘটনার সূত্রপাত। ইতোমধ্যে পুলিশ মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
- বিষয় :
- মুন্সীগঞ্জ