'আমি যে আপেল মাহমুদ, তা জীবিত থেকেই প্রমাণ করেছি'

জামুকার শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা আপেল মাহমুদ। ছবি-সমকাল
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫ | ২৩:৩১ | আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫ | ১৫:৩০
‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’ সাড়া জাগানো গানের গীতিকার এবং গায়ক আপেল মাহমুদ বীর মুক্তিযোদ্ধা কিনা, সে বিতর্কের অবসান হতে চলেছে।
সোমবার কুমিল্লা সার্কিট হাউসে শুনানির জন্য তাঁকে ডাকা হলে তিনি তদন্ত দলের কাছে প্রয়োজনীয় প্রমাণ উপস্থাপন করেন।
শুনানি শেষে আপেল মাহমুদ বলেছেন, ‘আমি যে আপেল মাহমুদ, তা জীবিত থেকেই প্রমাণ করেছি। আমি মুক্তিযোদ্ধা নই, এমন অভিযোগ ভুল প্রমাণিত হওয়ায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকার) সদস্যরা দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’
সার্কিট হাউসে শুনানি শেষে জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন জানান, গীতিকার আপেল মাহমুদ নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণ করতে পেরেছেন। আর আপেল মাহমুদ বলেন, ৩ নম্বর সেক্টরের সরাসরি যোদ্ধা তিনি। ক্যাপ্টেন মতিউর রহমানের কমান্ডে যুদ্ধ করেছেন।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর স্বাধীন বাংলা বেতার কর্মী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন গীতিকার আপেল মাহমুদের বিরুদ্ধে তিনি ‘মুক্তিযোদ্ধা নন’ বলে অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ মে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের উপপরিচালক (উন্নয়ন) ফাতেমা খাতুন তাঁর স্বপক্ষে যাবতীয় দলিল ও সাক্ষ্য উপস্থাপনের জন্য নোটিশ দেন।
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার সোনারচর এলাকার সন্তান আপেল মাহমুদ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’ গানের গায়ক হিসেবে বেশি পরিচিত। এ ছাড়া ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’ তাঁর একটি উল্লেখযোগ্য গান। সংগীতে অবদানের জন্য তিনি ২০০৫ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
শুনানি শেষে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন বলেন, ৫ আগস্টের পর কুমিল্লা জেলার ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধা নন, এমন অভিযোগ ওঠে। সেসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা সার্কিট হাউসে দুটি কমিটিতে শুনানি হয়। সেখানে আপেল মাহমুদ প্রমাণ করেছেন, তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যদি শুধু গান গেয়ে উদ্বুদ্ধ করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকতেন, তাহলেও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার খেতাব পেতেন। তবে তিনি কাগজে প্রমাণ করেছেন, সম্মুখ যোদ্ধাও ছিলেন।
- বিষয় :
- মুক্তিযোদ্ধা