ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

নদীর বালু দিয়েই ভরাট হচ্ছে কালীগঙ্গার তীর

নদীর বালু দিয়েই ভরাট  হচ্ছে কালীগঙ্গার তীর

কালীগঙ্গা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন। সোমবার রাতে কুমারখালীর বাঁশগ্রাম এলাকা সমকাল

 কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫ | ২২:৫৯

নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে তোলা হচ্ছে বালু। রাতে সে বালু দিয়েই ভরাট হচ্ছে নদীর তীর। সেখানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম বাজারসংলগ্ন কালীগঙ্গা নদীর জমি এভাবে ভরাট করছে একটি চক্র। রোববার থেকে নদীর অংশ ভরাট শুরু হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানান।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন ও সাইদুল ইসলাম এবং যুবদল নেতা ইমরান হোসেন এ কাজে যুক্ত। ইমরান নিজেকে ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি বলে দাবি করেছেন। তিনি বালু উত্তোলন ও ভরাটে যুক্ত বলে স্বীকারও করেছেন।
গত সোমবার রাত ১১টার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, কুসলিবাসা-বাঁশগ্রাম সড়কঘেঁষে বাজারসংলগ্ন এলাকায় নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। বাঁধ দিয়ে বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে তীরের প্রায় আট শতাংশ জমি। এর বর্তমান দাম অন্তত ৪০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
আরিফ ও ইমরান বালু তুলে তীর ভরাট করছেন বলে জানান ড্রেজার ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রশাসনের ভয়ে রাতে তোলা হচ্ছে বালু। তাঁর ভাষ্য, প্রতি ঘনফুট ৩ টাকা দরে সাত হাজার ফুট বালু তোলা হয়েছে। কয়েক দিন চলবে এ কাজ।
জানা গেছে, স্থানীয় কৃষক সরোয়ারের কাছ থেকে সড়কের পাশের পাঁচ শতাংশ জমি ইজারা নিয়েছেন বাজারের আরিফ ট্রেডার্সের মালিক আরিফ হোসেন। এ জমিসহ ১৩ শতাংশ জায়গায় বাঁধ দিয়ে বালু ফেলছেন ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম। তিনি ড্রেজার বসিয়ে প্রতি ঘনফুট ৩ টাকায় বালু তুলছেন।
এসব কাজ দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি দাবি করা ইমরান হোসেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ব্যবসায়ী সাইদুল ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু তুলে তীর ভরাট করে টাকা নিচ্ছেন। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে নদী ও জীববৈচিত্র্য।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জমির ইজারাদার আরিফ হোসেন বলেন, ‘সরোয়ারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ভরাটের পর আয়তন অনুযায়ী টাকা পরিশোধ করা হবে। এ পর্যন্ত লেনদেন হয়নি।’
বালু তোলার কথা স্বীকার করেছেন যুবদল নেতা দাবি করা ইমরান হোসেন। তিনি বলেন, ‘জায়গাটি ভরাট করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হবে। এসব নিয়ে রিপোর্ট-টিপোর্ট করার দরকার নেই।’
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটা বন্ধে কয়েকজনকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

আরও পড়ুন

×