ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

২০০ টাকায় প্রমোদতরী ঘুরে দেখার আশ মিটছে মানুষের 

২০০ টাকায় প্রমোদতরী ঘুরে দেখার আশ মিটছে মানুষের 

কর্ণফুলী নদীর মোহনায় নোঙর করা বিলাসবহুল প্রমোদতরী বে ওয়ান ক্রুজ

আহমেদ কুতুব, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৫ | ১৪:০৪

সাগরে প্রমোদতরীতে চড়ে আনন্দ ভ্রমণ পশ্চিমা বিশেষ করে ধনী দেশগুলোর মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশে প্রমোদতরীতে আনন্দ ভ্রমণের চল খুব একটা না থাকলেও, সুযোগ একেবারেই যে নেই এমন নয়। তবে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের সেই বিলাস ভ্রমণের সুযোগ হয়তো কখনোই ঘটে না। তবে সাগরে আনন্দ ভ্রমণ না হলেও চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীতে নোঙর করা একসময়কার বিলাসবহুল প্রমোদতরী ‘বে ওয়ান ক্রুজ’ ঘুরে দেখার সুযোগ এখন মিলছে মাত্র ২০০ টাকায়। ফলে প্রতিদিনই শত শত মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে টিকিট কেটে দর্শন করে আসছেন বে ওয়ান ক্রুজের অন্দরমহল। জাহাজের সঙ্গে লাগানো দুটি পল্টুনে থাকা সুইমিংপুলে শিশু থেকে সব বয়সের মানুষ মেতে উঠছেন আনন্দে।     

চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ ওয়েজদিয়া এলাকার টাইলস ব্যবসায়ী সিরাজুল মিয়া ১১ জুন স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন ‘বে ওয়ান ক্রুজ’ জাহাজে। সিরাজুল মিয়া বলেন, বছরজুড়ে ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। ঈদের লম্বা ছুটি হওয়ায় শহরে মানুষ কম, ব্যবসাও নেই। এই সুযোগে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে সমুদ্র দেখতে পতেঙ্গার নেভাল পয়েন্টে এসেছিলাম। দেখি কর্ণফুলী নদীর মোহনায় নোঙর অবস্থায় ‘বে ওয়ান ক্রুজ’ জাহাজ। মেয়ের বায়না মেটাতে তিনজন টিকিট কেটে ইঞ্জিন রুম থেকে তিনতলা গোটা জাহাজ ঘুরে দেখেছি। 

তাদের মতো পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ও আরজু সিকদার দুই বন্ধুও ঘুরতে এসেছিলেন বে ওয়ান ক্রুজে। ফেনীর সোনাগাজী থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে আসা রকিবুল ইসলাম দম্পতিও জাহাজ ঘুরে আনন্দ উপভোগ করেন। এমন আরও মানুষকে পাওয়া গেল, যারা জাহাজে উঠে কেউ মনের মতো করে সেলফি তুলছেন। কেউ ভিডিও করে জাহাজের সুখস্মৃতি ধরে রাখছেন। জাহাজের সঙ্গে লাগানো দুটি পন্টুনে থাকা সুইমিংপুলে জলকেলিতেও মেতেছিলেন কেউ কেউ।  
জানা গেছে, বে ওয়ান ক্রুজ জাহাজটি আগে চট্টগ্রাম থেকে সাগরপথে সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটক পরিবহন করতে। কিন্তু বেশ কয়েকবার যান্ত্রিক ত্রুটি ও পুরোনো হওয়ার কারণে এখন যাত্রী পরিবহন বন্ধ। এখন কর্ণফুলী নদীর মোহনায় স্থায়ী জেটি তৈরি করে জাহাজটি নোঙর করে রাখা হয়েছে। জেটির পাশেই তৈরি হয়েছে টিকিট কাউন্টার। সিঁড়ি তৈরি করে সহজেই জাহাজে দর্শনার্থী ওঠানামার ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। জাহাজের সুপারভাইজার মো. নিজাম বলেন, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য এই জাহাজ উন্মুক্ত থাকে। 

‘বে ওয়ান ক্রুজ’ নদীর পার থেকে দেখতে বড় জাহাজ মনে হলেও, ভেতরটা যেন বিলাসবহুল হোটেলের মতো। পাঁচতারকা মানের এই জাহাজে আছে সুইমিংপুল, কনফারেন্স হল, আন্তর্জাতিক মানের রেস্টুরেন্ট, ড্যান্স বার, বাঙ্কার বেড কেবিন, টুইন বেড কেবিনসহ আধুনিক নানা সুযোগ-সুবিধা। ১৭ জন অপারেটিং ক্রুসহ শতাধিক স্টাফ রয়েছে। জাপান থেকে ২০২২ সালে জাহাজটি চট্টগ্রামে এনে বিলাসবহুল রূপ দেওয়া হয়। জাহাজটি ৫৫ ফুট প্রস্থ ও ৪৫০ ফুট লম্বা। 

আরও পড়ুন

×