ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

অর্ধেক গ্যাস, অর্ধেক পানি সিলিন্ডারে ভরে বাজারজাত, যুবকের ৬ মাস কারাদণ্ড

অর্ধেক গ্যাস, অর্ধেক পানি সিলিন্ডারে ভরে বাজারজাত, যুবকের ৬ মাস কারাদণ্ড

বিভিন্ন কোম্পানির লোগো দিয়ে বাজারজাত করা হয় সিলিন্ডারগুলো। এমন একটি কারখানায় অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছবি: সমকাল

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫ | ১৭:৪১

বাইরে থেকে দেখা যায় মুরগীর ফার্ম। ভেতরে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার প্রক্রিয়ার বিশাল কারখানা। রয়েছে কম্প্রেশার ও হাওয়া মেশিন। যে মেশিন দিয়ে এলপিজি গ্যাসের বোতল অর্ধেক খালি করে অন্য বোতলে অর্ধেক দেওয়া হয়। তারপর বাতাস ও পানি দিয়ে বাকি অর্ধেক পূরণ করে দেয়। বিভিন্ন কোম্পানির লোগো দিয়ে বাজারজাত করা হয় সিলিন্ডারগুলো। এমন ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার কলাউজান ইউনিয়নে।

গোপন সংবাদে গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলার কলাউজান ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের খালদাদ খাঁন পাড়ার তেলি পুকুর পাড় সংলগ্ন ওই মুরগির ফার্মে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল।

এ সময় একটি কম্পেসার মেশিন, একটি ওজন মাপার যন্ত্র, ২৭১টি সিলিন্ডার, একটি পাওয়ার সাপ্লায়ার মেশিন, ৩০ মিটার সংযোগ পাইপ, ১০০টি লেবেল জব্দ করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল বলেন, মুরগির খামারের ভেতরে কমপ্রেসারের মাধ্যমে পানি ও বাতাস মিশিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তি করছিল একটি চক্র। তারা এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারে বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের স্টিকার ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে মো. ইলিয়াছ নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত যুবক মো. ইলিয়াছ (২৫) ওই এলাকার আবদু শুক্কুরের ছেলে।

কলাউজান ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ভুট্টো বলেন, মুরগির ফার্মের আড়ালে মেশিনের মাধ্যমে সিলিন্ডারে পানি ও হাওয়া আর অল্প গ্যাস দিয়ে বসুন্ধরা কোম্পানিসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের বোতল ব্যবহার করে সেখানে স্টিকার লাগিয়ে বাজারজাত করছিল ওই চক্র। অথচ, আমরা টেরই পেলাম না। এটি বড় ধরণের প্রতারণা। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ইনামুল হাসান বলেন, রাতের বেলায় মানুষ ঘুমিয়ে গেলে ঝুকিপূর্ণ, অনৈতিক, অনুমোদনবিহীন কাজটি বেশকিছু দিন ধরে করছে এই চক্র। একজন সচেতন মানুষের তথ্যের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে সফল অভিযান সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইতিপূর্বে এই উপজেলায় একই ক্যাটাগরির বেশকিছু অনুমোদনবিহীন ট্রাকে করে সিএসজিতে গ্যাস বিক্রি হতো। এগুলো এক একটি ছিল এক একটি বোম। ছিল আবাসিক এলাকায় অনুমোদনবিহীন সিলিন্ডারের কার্যক্রম। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আমরা এগুলো অভিযান করে বন্ধ করে দিয়েছি। 

প্রসঙ্গত, উপজেলার মহাসড়কসহ ইউনিয়নগুলোতে রয়েছে অর্ধশতাধিক গ্যাস সিলিন্ডারের গোডাউন। যেখানে নেই পরিবেশ ছাড়পত্র। নেই অগ্নিনির্বাপকের কোনো ব্যবস্থা। এসব অবৈধ গোডাউনে অভিযান পরিচালনা দাবি তুলেন সচেতন মহল।

আরও পড়ুন

×