ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ফরিদপুরে এ. কে. আজাদের বাড়িতে চড়াও হলেন বিএনপির একাংশের নেতাকর্মী

ফরিদপুরে এ. কে. আজাদের বাড়িতে চড়াও হলেন বিএনপির একাংশের নেতাকর্মী

ছবি: সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুর

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫ | ২৩:৩১

ফরিদপুরে হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদের বাড়িতে চড়াও হয়েছেন স্থানীয় বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা। ‘আওয়ামী লীগের গোপন মিটিং’ হচ্ছে– দুয়ো তুলে এই ঘটনা ঘটানো হয়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের ঝিলটুলীতে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই বাড়িতে ছিলেন হা-মীম গ্রুপের ল্যান্ড অফিসার মো. রাফিজুল খান, হা-মীম গ্রুপের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. সোলাইমান হোসেন, সিকিউরিটি গার্ড মেহেদী হাসান ও ক্লিনার মো. হান্নান মিয়া।

রাফিজুল খান বলেন, কিছু লোক বাড়ির গেটে বারবার আঘাত করলে সিকিউরিটি গার্ড মেহেদী হাসান এগিয়ে যান। এক পর্যায়ে গেট খুলে দিলে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা, মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম নাহিদসহ কয়েকজন বাড়িতে ঢুকে পড়েন। তারা বাড়িতে আওয়ামী লীগের গোপন সভা হচ্ছে কিনা– এই বলে ধমকাধমকি করেন। এক পর্যায়ে খালি বাড়ি থেকে তারা বেরিয়ে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ. কে. আজাদের বাসা থেকে বের হয়ে মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা পাশে ভূমি অফিসের সামনে জড়ো হন। পরে সেখানে শতাধিক লোক জড়ো করা হয়। তারা মিছিল বের করে। মিছিলটি ভূমি অফিসের সামনে থেকে শুরু হয়ে অনাথের আচারের মোড় এলাকায় যায়। 
মিছিলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ফরিদপুর মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী রেজোয়ান বিশ্বাস, ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাহরিয়ার হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনিব হাসান প্রমুখ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ বলেন, ‘আমরা জানতে পারি, ঝিলটুলীর ওই বাড়িতে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করার জন্য সভা করছে। সে জন্য আমরা ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম।’

একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে দেশের শীর্ষ একজন ব্যবসায়ীর বাড়িতে এভাবে চড়াও হতে পারেন কিনা– জানতে চাইলে মিরাজ বলেন, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচন করতে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক মন্ত্রী বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে নায়াব ইউসুফ। এ জন্য আমরা কাজ করছি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নায়াব ইউসুফ জানান, শহরে এ. কে. আজাদের অনেক বাড়ি। আজ বিএনপির একটি মিছিল হয়েছে; কিন্তু কোন বাড়িতে বিএনপির নেতাকর্মীরা চড়াও হয়েছে– এ খবর আমার জানা নেই।

নায়াব ইউসুফ দাবি করেন, এ. কে. আজাদ আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এলাকার মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তবে আমি হিংসার রাজনীতি করি না, হামলার রাজনীতি করি না। আমি এর পক্ষপাতী নই। সন্ত্রাস-বিশৃঙ্খলা আমি পছন্দ করি না এবং আমার নেতাকর্মীদের করতে দিই না।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী জানান, তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ. কে. আজাদের বাড়িতে কিছু ঘটেছে বলে তাঁর জানা নেই। কেউ তাঁকে জানায়নি।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদউজ্জামান বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে খবর পাই এ. কে. আজাদের বাড়িতে বিএনপির লোকজন গিয়েছে। পরে দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ কাউকে পায়নি।

আরও পড়ুন

×