ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল

চিকিৎসক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে সেবা

চিকিৎসক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে সেবা

ফরিদপুর অফিস

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২১ | ০৯:৩০ | আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২১ | ০৯:৫৭

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। ১০৩ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী এ হাসপাতালটিতে বর্তমানে জনবলের তীব্র সংকট রয়েছে। ৩৭টি পদের বিপরীতে এখানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ১২ জন। তার মধ্যে আবার দু'জনকে পাঠাতে হয় জেলখানায় চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য। তা ছাড়া হাসপাতালে চক্ষু, কার্ডিওলজি, অর্থোপেডিকসহ কয়েকটি বিভাগে কোনো কনসালট্যান্ট নেই। বৃহস্পতিবার এক মতবিনিময় সভায় এসব সমস্যার কথা উঠে আসে।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ফরিদপুরের উদ্যোগে গতকাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন বিষয়ে এক ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

সনাক ফরিদপুরের সভাপতি অ্যাডভোকেট শিপ্রা গোস্বামীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন ডা. মো. সিঙ্ঘিকুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন- সনাক ফরিদপুরের স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটির আহ্বায়ক মনোয়ারা মোর্শেদা চৌধুরী। 

সভায় করোনাকালে হাসপাতালের সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবা, মায়েদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার সচল রাখা, ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, প্রতিদিনের ওষুধের তালিকা হালনাগাদকরণ, দালালের উপদ্রব নিরসন এবং কভিড-১৯ ভ্যাকসিন কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, জনবল সংকটের মধ্যেও মানুষ যাতে স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত না হয় তার জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দালালের উপদ্রব বন্ধে পুলিশ সুপারকে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি। কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করেছি। আগের তুলনায় কিছুটা হলেও দালালের আনাগোনা কমেছে। পুরোপুরি দালালমুক্ত করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, হাসপাতালে যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে, সেগুলোর জন্য বাইরে না পাঠানো এবং কোনো ক্লিনিকের ছাপানো কাগজে টেস্টের অ্যাডভাইস না দিয়ে প্রয়োজনীয় টেস্টের নাম প্রেসক্রিপশনে লিখে দিতে চিকিৎসকদের মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছি, প্রয়োজনে চিঠি দেওয়া হবে।

ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফরিদপুরে ৬০ হাজার ডোজ টিকা সংরক্ষণের ক্যাপাসিটি রয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রতি উপজেলায় একটি, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারটি ও সদর হাসপাতালে একটি কেন্দ্র থেকে টিকা দেওয়া হবে। টিকার জন্য অনলাইনে রেজিস্টেশন করতে হবে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর্মীরা আগে টিকা পাবেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক গনেশ কুমার আগরওয়ালা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রেডিওলজি বিভাগে কোনো জনবল নেই। ফলে এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রামের মতো সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। আউটডোরে ওষুধের তালিকার বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন ওষুধ যুক্ত হলে বা ওষুধ পরিবর্তন হলে তালিকা হালনাগাদ করা হয়।

অ্যাডভোকেট শিপ্রা গোস্বামী বলেন, স্বল্প জনবল দিয়ে কর্তৃপক্ষের সেবা প্রদানের আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি চিকিৎসকদের শূন্যপদ পূরণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং এ বিষয়ে সনাক ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়ার কথা জানান।

মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সনাক সহ-সভাপতি অধ্যাপক শিপ্রা রায়, সদস্য কামরুন্নাহার পপি, স্বজন সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট বশির আহমেদ চৌধুরী, সহ-সমন্বয়ক মাহবুবুর রহমান ও রিসালাতুন্নাহার। সভা সঞ্চালনা করেন টিআইবির এরিয়া ম্যানেজার জহিরুল ইসলাম জুয়েল।

আরও পড়ুন

×