চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প তদারকিতে কমিটি গঠন

ফাইল ছবি
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২১ | ০৭:৫১
চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধান এবং সিটি মেয়র ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়। তবে কমিটির সদস্য সংখ্যা চূড়ান্ত করা হয়নি। কমিটি প্রতি মাসে প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম ও অগ্রগতি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দেবে।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন, কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, দখল ও দূষণরোধে গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য এই সভার আয়োজন করে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
কবে নাগাদ চট্টগ্রাম নগরী জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে সভা শেষে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ হিমালয়ের পাদদেশের একটি দেশ। এখানে পলি জমবে। অতিমাত্রায় বৃষ্টি হলে পানির প্রবাহও বাড়ে। ফলে এখানে জলাবদ্ধতা থাকবে। এটা যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে এ জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনসহ চট্টগ্রামকে একটি সুন্দর নগরী নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন। সেগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ বাস্তবায়ন কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন হচ্ছে কিনা, সেগুলো নিজের চোখে দেখার জন্য আমি চট্টগ্রামে এসেছি। অনেকগুলো প্রকল্প আমি নিজে ঘুরে দেখেছি। এগুলো বাস্তবায়নে যাতে সঠিকভাবে হয়, বাস্তবায়নকালীন কোন ত্রুটি বিচ্যুতি চিহ্নিত হলে সেগুলো যাতে সমাধান করতে পারে, এ জন্য বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে মেয়র এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা করে একটি কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটি প্রতিমাসে একটি সভা করে এ প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে কাজ করবেন।’
সভায় অংশ নেওয়ার আগে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দর থেকে মহানগরী পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর পাড় লিজ দিয়ে কোনো ধরনের শিল্প কল-কারখানা নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। চট্টগ্রামকে দেশের অর্থনীতির প্রাণ ও চট্টগ্রাম শহরকে নিয়ে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই।’
সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘অহেতুক কেউ কারও ওপর দোষারোপ করার মাধ্যমে সরকারের অর্জন ম্লান করার অধিকার কারও নেই।’ এ সময় তিনি সেবা সংস্থারগুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে নগরীর জলাবদ্ধতাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, স্থানীর সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষসহ বিভিন্ন সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিডিএ। একটি প্রকল্প সিটি করপোরেশন এবং অন্যটির কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। রুদ্ধদ্বার এই সভায় জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালকেরা প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম ও অগ্রগতি উপস্থাপন করেন।
- বিষয় :
- চট্টগ্রাম
- জলাবদ্ধতা
- জলাবদ্ধতা নিরসন
- কমিটি গঠন