পাবনায় বিধবাকে শিকলে বেঁধে জমি দখলের অভিযোগ, ভিডিও ভাইরাল

শেকলে বাঁধা রাশেদা খাতুন - সংগৃহীত
পাবনা অফিস
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২২ | ০৬:৫১ | আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২২ | ০৮:১৭
পাবনার আটঘরিয়ায় রাশিদা খাতুন নামে এক বিধবা নারীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে তার জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার জেলার আটঘরিয়ার চাঁদভা ইউনিয়নের বাঐখোলা গ্রামে।
রাশিদা খাতুনের অভিযোগ, শুক্রবার দুপুরে চাঁদভা ইউনিয়নের বাঐখোলা গ্রামের রহিম উদ্দিনের ছেলে রমিজ উদ্দিন লাঠি দিয়ে তাকে মারপিট করে। শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে তার ২০ শতক আবাদি জমির উপর টিনের ঘর তুলে দখল কায়েম করে। এসময় স্থানীয়রা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আটঘরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
রাশিদার ছেলে মিনারুল ইসলামের অভিযোগ, বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানোর পরেও কোনো ব্যবস্থা নেযনি। পরে ৯৯৯-এ ফোন দিলে আটঘরিয়া থানার এসআই আবুল কালাম ঘটনাস্থলে গিয়েও রমিজ উদ্দনের পক্ষে অবস্থান নেন।
রাশিদার প্রতিবেশীদেরও অভিযোগ একই রকম। তারা জানান, রমিজ উদ্দিন ঘটনার দিন বহিরাগত লোকজন নিয়ে এসে অর্তকিতভাবে রাশিদার জমি দখল করে। ঘটনাস্থলে এসে এসআই আবুল কালাম আসামিদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের পক্ষে অবস্থান নেন।
জমি দখলের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে আটঘরিয়া থানার এসআই আবুল কালাম সমকালকে বলেন, শিকল দিয়ে বাঁধার যে ঘটনা সেটি আসলে সাজানো নাটক।
এ ব্যাপারে রমিজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে রমিজের স্ত্রী রোজিনা খাতুন সমকালকে বলেন, এই জমি তার স্বামী রমিজ উদ্দিন এবং তার ওয়ারিশদের। রাশিদা তার সৎ শ্বাশুড়ি। তার শ্বশুর তিন বিয়ে করার কারণে তাকে বাড়িতে না রেখে ওই জমিতে ঘর তুলে থাকতে দেন। কিন্তু এখন তিনি আর সেই ঘরে থাকেন না। গ্রাম সালিশে মাতব্বরা তাকে উঠে যেতে বললেও তিনি উঠে যাননি। তাকে কেউ নির্যাতন করেনি। মিথ্যা নাটক সাজিয়েছেন তিনি।
চাঁদভা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম কামাল বলেন, এক নারীকে শিকল দিয়ে বেঁধে জমি দখল করে নেওয়া হয়েছে-এমন একটি ভিডিও তার নজরে এসেছে। এ বিষয়ে আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগও এসেছে।
আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, ঘটনার সময় এসআই আবুল কালামকে পাঠানো হয়েছিলো। ভুক্তভোগীরা যে অভিযোগ করেছেন, তা ঠিক নয়।
আটঘরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম বলেন, বিষয়টি খুবই দু:খজনক। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।