নরসিংদীতে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে ২ গৃহবধূ খুন

মানসুরা আক্তার ও সুবর্ণা আক্তার (ডানে)
নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২২ | ০৮:৪০ | আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২২ | ০৮:৪০
নরসিংদীতে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে সুবর্ণা আক্তার (২১) এবং মানসুরা আক্তার (২৫) নামে দুই গৃহবধূ খুন হয়েছেন। শুক্রবার রাতে নরসিংদী সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া সোহেল মিয়ার স্ত্রী সুবর্ণা আক্তার খুন হন। অন্যদিকে, মানসুরা আক্তার হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে ওই দিন বিকেলে নরসিংদী পৌর শহরের সাটিরপাড়া এলাকার সাত্তার ভিলায়। তিনি স্থানীয় সাটিরপাড়া কালিকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মসিউর রহমান হিমেলের স্ত্রী।
নিহতদের স্বজন এবং স্থানীয় লোকজনের ভাষ্যমতে, সুবর্ণা আক্তার খুন হয়েছেন তার স্বামীর হাতে এবং মানসুরা আক্তার খুন হন দুর্বৃত্তের হাতে। তবে পুলিশ এ দুই হত্যাকাণ্ডের সুস্পষ্ট কারণ জানায়নি।
নিহত সুবর্ণার স্বজন ও পুলিশ বলছে, শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে সাংসারিক অভাব-অনটন নিয়ে সুবর্ণা এবং তার স্বামী সোহেলের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সোহেল ও সুবর্ণা দু'জনেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে উত্তেজিত সোহেল ঘরে থাকা একটি রেঞ্জ (ধাতব যন্ত্র) দিয়ে সুবর্ণার নাকে, মুখে ও মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে। রেঞ্জের আঘাত পেটে লাগলে সুবর্ণার নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে যায়। এ সময় ছয় মাস বয়সী শিশুটি তাদের পাশেই ঘুমিয়ে ছিল।
ওই সময় সুবর্ণার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে পুলিশে খবর দেন। পরে রাত ২টার দিকে থানার উপপরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী ঘটনাস্থলে যান। ওই সময় গুরুতর আহত অবস্থায় সুবর্ণাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠালে রাত আড়াইটার দিকে সেখানে তার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ সুবর্ণার স্বামী সোহেলকে গ্রেপ্তার করে।
অপর ঘটনায় নিহত মানসুরার বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা এলাকায়। আর তার স্বামী হিমেলের বাড়ি নরসিংদীর বেলাব উপজেলার সল্লাবাদ ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রামে। তারা সাটিরপাড়ার সাত্তার ভিলায় ভাড়া থাকতেন। মানসুরা আক্তারের স্বজনরা জানান, শুক্রবার সকালে তার স্বামী মসিউর রহমান হিমেল তার গ্রামের বাড়ি বেলাবতে গিয়েছিলেন এবং দুপুর দেড়টার দিকে স্ত্রীকে ফোন করলে কেউ ফোন ধরেননি। তখন হিমেল তার শাশুড়িকে ফোন করলে তারা বিকেল ৩টার দিকে সাটিরপাড়ার মেয়ের বাসায় এসে দেখেন মানসুরার গলাকাটা রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে ঘরে। পরে খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে নরসিংদী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মানসুরার মৃতদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মানসুরার স্বামী হিমেলকে পুলিশ আটক করা হলেও তার সংশ্নিষ্টতা না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ হত্যাকাণ্ডটি কোনো দুর্বৃত্ত ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নরসিংদী সদর মডেল থানার ওসি শওগাতুল আলম সমকালকে জানান, সুবর্ণা আক্তার খুনের ঘটনায় তার স্বামী সোহেলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে মানসুরা আক্তার হত্যাকাণ্ডের রহস্য এখনও উদ্ঘাটন করা যায়নি। কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান সমকালকে জানান, খুব শিগগির মানসুরা খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হবো। আর সুবর্ণা হত্যায় ব্যবহূত রেঞ্জ ও বঁটিসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
- বিষয় :
- নরসিংদী
- খুন
- গৃহবধূ খুন