বেচে দেওয়া নবজাতক ফিরে এলো মায়ের বুকে

ইকবাল হোসেন,মতলব (চাঁদপুর)
প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ০৩:৩৫ | আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ০৩:৩৫
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় হাসপাতালের বিল দিতে ব্যর্থ হয়ে বিক্রি হয়ে যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বুকের ধন ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা মায়ের সঙ্গে অশ্রুসিক্ত হয়েছেন প্রশাসনের লোকজনও। বৃহস্পতিবার রাতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও স্থানীয় থানা পুলিশের সহযোগিতায় মতলব উত্তরের ষাটনল এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী শরিফুল হাসান বলেন, 'সন্ধ্যার পর শিশু বিক্রির বিষয়টি জানার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি), মতলব উত্তর থানা পুলিশ ও স্থানীয় জনসাধারণের সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালাই। পরে উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নে শিশুটি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হলে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করি।'
শরিফুল হাসান জানান, শিশু কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত উভয় পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় যে, তারা সম্মতির ভিত্তিতেই এটা করেছেন। এ অবস্থায় শিশুটিকে কিনে নেওয়া নারী ছেলেটিকে আর তার বলে দাবি করবেন না, এই মর্মে মুচলেকা নিয়ে তাকে প্রকৃত মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য শিশুটির মায়ের হাতে উপজেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়নের হানিরপাড় গ্রামের দিনমজুর মো. আলমের স্ত্রী তামান্না বেগমের (২৮) প্রসববেদনা উঠলে তিনি গত ২৬ জানুয়ারি ছেংগারচর পালস্ এইড হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে পুত্রসন্তান জন্ম দেন তামান্না। ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি থাকেন তিনি।
রিলিজের সময় হাসপাতালে বিল আসে ২৬ হাজার টাকা। ওই টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন তামান্না বেগম। এ অবস্থায় ছেংগারচর বাজারের কাউসার নামে এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে মাত্র ৫০ হাজার টাকায় ওই সন্তানকে বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেন তামান্না। সন্তান বিক্রির পর ওই মা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।
অবশ্য পালস এইড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফুল ইসলাম বলেন, 'সিজারিয়ান অপারেশন আমাদের এই হাসপাতালে হয়েছে। কিন্তু বাচ্চা বিক্রির বিষয়টি সঠিক না।'
তার দাবি, তামান্না বেগমের সঙ্গে তার স্বামী মো. আলমের যোগাযোগ নেই। এ কারণেই বাচ্চা বিক্রির নাটক সাজান তামান্না।