ইলমার কান্না থামাতে পারছে না কেউ

হরিণাকুণ্ডু (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ০০:৫৭
কখনও নানি, কখনও মামি আবার কখনও অন্য স্বজনের কোলে ঠাঁই হচ্ছে তিন মাসের শিশু ইলমার। তবে কারও কোলে গিয়েই অবুঝ শিশুটির কান্না থামছে না। ক্ষুধা নিবারণে গাভীর দুধ কিংবা শিশুখাদ্য কিছুই মুখে তুলছে না সে।
তার অবাক চাহনিতে যেন শুধু মায়েরই খোঁজ। পৃথিবীর সঙ্গে এখনও তেমন পরিচয় ঘটেনি তার। তাই তো রাতদিন একাকার করে কেঁদে বুক ভাসায় সে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে শিশুটিকে বিছানায় শুইয়ে রেখে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন মা কনিকা খাতুন (১৯)। এরপর থেকে কোনোভাবেই থামছে না ইলমার কান্না। সে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার আদর্শ আন্দুলিয়া গ্রামের মানিক মণ্ডলের মেয়ে। বর্তমানে পাশের গ্রাম রামনগরে নানার বাড়িতে রয়েছে সে।
শিশুটির নানি ছায়েরা খাতুন জানান, ওর মায়ের মৃত্যুর পর থেকে রাতদিন শুধুই কাঁদছে। বাইরের কোনো খাবারও খাচ্ছে না। মামি দিনে দু-একবার দুধ খাওয়ালেও তা অপ্রতুল। কারণ তারা তো এই বাড়িতে থাকেন না। আর তাদেরও সংসার রয়েছে। এমন হলে তাকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। অবুঝ শিশুটি নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন তারা।
সম্পর্কে মামি রোজিনা খাতুন বলেন, তার বিয়ে হয়েছে অন্য এলাকায়। কয়েকদিন আগে বাড়িতে এসেছেন। শিশুটির কান্না থামাতে মাঝেমধ্যে দুধ খাওয়াচ্ছেন। তবে তা মুখে তুলতে চাচ্ছে না সে। এ ছাড়া তিনিও দু'দিন পর শ্বশুরবাড়ি চলে যাবেন। তখন এই অবুঝ শিশুর কী হবে? এই ভেবে খুব খারাপ লাগছে।
ইলমার নানা মনিরুল ইসলাম জানান, ওর মায়ের মৃত্যুর পর তাদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এরপর আবার এই অবুঝ শিশু। ওর বাবাসহ কারও কোলেই সে যেতে চাচ্ছে না। শুধু কাঁদছে। কীভাবে যে এই শিশুকে বাঁচিয়ে রাখবেন তারা বুঝতে পারছেন না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জামিনুর রশিদ জানান, মায়ের দুধই শিশুর আদর্শ খাদ্য। শিশুদের ক্ষুধা নিবারণে অন্তত ছয় মাস বয়স পর্যন্ত বুকের দুধের বিকল্প নেই। যেভাবেই হোক কোনো না কোনো নারীর বুকের দুধ শিশুটিকে খাওয়াতে হবে। আর তারা নিয়মিত শিশুটির খোঁজ রাখবেন বলে আশ্বাস দেন।
- বিষয় :
- আত্মহত্যা
- ঝিনাইদহ
- শিশুর কান্না