বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম প্রতিরোধে
ভ্রূণের ত্রুটি নির্ণয়ের পরীক্ষা চালু করল বিএসএমএমইউ

বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২২ | ০৫:৪৭ | আপডেট: ১৪ জুন ২০২২ | ০৬:০০
অটিজম ও বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম প্রতিরোধের লক্ষে দেশে প্রথমবারের মতো গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসের ভ্রূণের ক্রোমোজোমাল বা জিনগত ত্রুটি নির্ণয়ের পরীক্ষা চালু করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।
আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে এই পরীক্ষার উদ্বোধন করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগ, ফিটোম্যাটারনাল মেডিসিন বিভাগ, রেডিওলজি ইমেজিং বিভাগ এবং ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের সমন্বয়ে এই পরীক্ষা চালু করা হয়েছে।
মায়ের গর্ভে ১১ হতে ১৪ সপ্তাহে অর্থাৎ বাচ্চার আকার যখন দেড় থেকে দুই ইঞ্চি তখন ডাউন সিনড্রোম ও অন্যান্য ক্রোমোজোমাল ত্রুটিতে ভ্রূণ আক্রান্ত কিনা তার ঝুঁকি নির্ণয় পরীক্ষা করা যাবে। পরীক্ষায় উচ্চ ঝুঁকি পাওয়া গেলে তা আরেকটি পরীক্ষার মাধ্যমে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবতোষ পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ব্যাসিক সাইন্স ও প্যারা ক্লিনিক্যাল সাইন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শিরিন তরপদার বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম। প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল দেশে ডাউন সিনড্রোম নিয়ে জন্মগ্রহণ করা শিশুদের সংখ্যা ও সমাজে তার প্রভাব নিয়ে আলোকপাত করেন। রোস ডায়াগনস্টিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নরেন্দ্র ভাদ্রে ও জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক ডা. দীপিকা জিনদাল গর্ভাবস্থায় ভ্রূণে জেনেটিক ত্রুটি নির্ণয়ের প্রযুক্তিগত ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত বলেন।
অনুষ্ঠানে শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্মরণীয় দিন। গর্ভবতী মায়েদের যদি আমরা আরলি স্ক্রিনিং করতে পারি, তাহলে দেশের বার্ডেন কমানো সম্ভব। বার্ডেনটা কী? এই অটিস্টিক শিশু বা ডাউন সিন্ড্রোম রোগী। এসব রোধে আমাদের বিশেষজ্ঞরা মত দিয়ে থাকেন, বেশি বয়সে বিয়ে করা ঠিক হবে না। উপযুক্ত বয়সে বিয়ে হওয়া দরকার। ত্রিশ বছর বয়সে বা পরে যদি বিয়ে হয়, ৯০০ জন মায়ের মধ্যে একজন ডাউন শিশু জন্মগ্রহণ করবে। কিন্তু ৩৫ বছর বয়সের পর ঝুঁকি দ্রুত বাড়তে থাকে। ৩৫ বছর বয়সের প্রতি ৩৫০ জন গর্ভবতী মায়ের মধ্যে একজনের এবং ৪০ বছর বয়সের প্রতি ১০০ জন মায়ের একজনের ডাউন শিশু হতে পারে।
উপাচার্য বলেন, ডাউন শিশু চেনার উপায় হলো শিশুর বুদ্ধি কম থাকে, নাক চ্যাপ্টা থাকে, কথা বলা দেরিতে শেখে, বসতে কষ্ট হয়, হাটতে দেরি হয়। তাদের জন্ম পর বাবার যেমন কষ্ট সমাজের কষ্ট।
উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, জন্মের পরে আমরা শিশুদের স্ক্রিনিং প্রকল্প শুরু করেছি। গবেষণার কাজে ১০০ কোটি টাকার প্রকল্পে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৭টি প্রজেক্ট জমা হয়েছ।
অনুষ্ঠান থেকে জানানো হয়, দেশে প্রায় আড়াই লাখ ডাউন শিশু আছে। ডাউন শিশু হলো এক ধরনের ক্রোমাজোমাল অ্যাবনর্মালিটি। নারী যত অধিক বয়সে মা হবেন, তার সন্তান ডাউন শিশু হওয়ার সম্ভাবনাও তত বেশি হবে।
- বিষয় :
- অটিজম
- বিকলাঙ্গ শিশু
- বিএসএমএমইউ