তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি: ঢাকার অনুরোধে আবারও দিল্লির আশ্বাস

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২২ | ১০:৩০ | আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২২ | ১৪:৩২
একযুগ পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার পানিসম্পদ মন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ নদী কমিশন বা জয়েন্ট রিভার কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেআরসি বৈঠকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সইয়ের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে চুক্তিটি সই করতে সর্বাত্মক চেষ্টা ভারতীয় পক্ষ থেকে করা হবে বলে জানানো হয়।
বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ভারতীয় আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পও উত্থাপিত হয়। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার ৩৮তম জেআরসি বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল। সেই বৈঠককে কেন্দ্র করে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির খসড়া ২০১১ সালে চূড়ান্ত করা হয়। খসড়া অনুযায়ী তিস্তার পানি উভয় দেশে সমানভাবে পাবে। ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মনমোহন সিংয়ের সফরে চুক্তিটি হওয়ার কথা ছিল। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে সেটি আর সই হয়নি। আর এরপর থেকে ভারতের পক্ষ থেকে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসা হচ্ছে।
বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে বৃহস্পতিবারের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। যাতে দুই দেশের পানিসম্পদ সংক্রান্ত সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে দুই দেশের অভিন্ন নদী গঙ্গা, তিস্তা, মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার এবং কুশিয়ারা নদীর যাবতীয় বিষয় উঠে আসে। এ ছাড়া বন্যা-সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়, নদীর তীর রক্ষণাবেক্ষণ, অভিন্ন অববাহিকা ব্যবস্থাপনা ভারতীয় আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন পানিবণ্টন চুক্তির জন্য খসড়া তৈরিতে আরও ৮টি অভিন্ন নদীর তথ্য বিনিময়ে জেআরসি বৈঠকে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত।
বৈঠকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কুশিয়ারা নদীর সমঝোতার জন্য বাংলাদেশের পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম অনুরোধ করেন। বিষয়টি ভারতের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে বলে ভারতীয় মন্ত্রী বৈঠকে জানান।
১৯৯৬ সালে করা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির আলোকে আবারও সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বৈঠকে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছে। দুই দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রী পর্যায়ের জেআরসি বৈঠকের আগে গত ২৩ আগস্ট দুই দেশের পানিসম্পদ সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সূত্র জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে আগামী সেপ্টেম্বরের ৬-৭ তারিখ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত যাওয়ার কথা রয়েছে। তারই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারত বিভিন্ন খাতে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার পূর্বপ্রস্তুতির অংশ হিসেবে জেআরসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করেন।