ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

গুলজা গণহত্যাসহ উইঘুরদের নির্যাতন নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত দাবি

গুলজা গণহত্যাসহ উইঘুরদের নির্যাতন নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত দাবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৬:০৮ | আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৬:০৮

গুলজা গণহত্যাসহ উইঘুর মুসলমানদের ওপর চীন সরকারের চালানো নির্যাতনকে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন দাবি করে জাতিসংঘের অধীনে এসব ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছে ইসলামিক প্রগতিশীল জনতা ফ্রন্ট। একইসঙ্গে ওআইসি ও মুসলিম বিশ্বকে উইঘুরদের রক্ষায় জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বানও জানিয়েছে সংগঠনটি।

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে গুলজা গণহত্যার ২৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে রোববার 'উইঘুর মুসলিমদের মুক্তি আর কতদূর' শীর্ষক আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানায় বক্তারা।

ইসলামিক প্রগতিশীল জনতা ফ্রন্টের আহ্বায়ক মাওলানা আতাউর রহমান আতিকী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ভৌগলিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিবেচনার মারপ্যাচে উইঘুর মুসলিমদের ইতিহাস সংগ্রাম, নির্যাতন, নিষ্ঠুরতায় পরিপূর্ণ। ফিলিস্তিনি, মুর, রোহিঙ্গা সম্পর্কে মানুষ জানলেও চীনাদের রক্ষণশীল, নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম ব্যবস্থার কারণে উইঘুরদের বাস্তব পরিস্থিতি ও গুলজা ট্রাজেডি সম্পর্কিত তথ্য সাধারণ পর্যায়ে এখনও স্পষ্টভাবে পৌঁছায়নি।

১৯৯৭ সালের জানুয়ারির শেষ দিক থেকে শুরু করে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের গুলজা শহরে স্বাধীনতাকামী মুসলিমদের ওপর চীন সরকারের দমন-নিপীড়নের সেই দুঃসহ ঘটনা গুলজা গণহত্যা নামে পরিচিত। এ সময় প্রায় ২০০ মানুষকে হত্যা করা হয়। অসংখ্য মানুষ আহত হওয়ার পাশাপাশি ১ হাজার ৬০০ মুসলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিরীহ জনতার ওপর এমন আগ্রাসনের ফলে অনেকই চীন থেকে পালিয়ে যায়।

বক্তারা বলেন, উইঘুরদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন শুধু কোনো মুসলিম ধর্মীয় ইস্যু নয়। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বের নির্যাতিত নিপীড়িত জনপদ ফিলিস্তিন প্রশ্নে সবাই যেমন একাট্টা, তেমনই পদক্ষেপের মাধ্যমে উইঘুরদের বিরুদ্ধে সকল ধরনের আগ্রাসন, মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের জন্য আওয়াজ তুলতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের বরাতে বিবিসি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, জিনজিয়াংয়ে মোট উইঘুর মুসলিম ১ কোটি ২০ লাখ। জিনজিয়াংয়ে সরকার নিয়ন্ত্রিত শিবিরে বন্দি আছে আনুমানিক বিভিন্ন ধর্মালম্বী ১০ লাখ মুসলমান। চীনা সরকার মিডিয়ার সব কর্মকাণ্ড স্তব্দ রেখে বছরের পর বছর ২২ লাখ মুসলিমকে বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রেখে তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন, হত্যাসহ অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

তারা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় চীন পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করেছিল। মিয়ানমারের সরকারের জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বন্ধে চীনের পরোক্ষ যোগসাজশ রয়েছে।

তারা আরও বলেন, চীনা সরকার মানবাধিকারকর্মী, সংবাদকর্মী, জাতিসংঘের কর্মকর্তাদেরও উইঘুরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। পুরো পৃথিবীকে অন্ধকারে রেখে তারা এসব অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সব দেশ মিলে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস করিয়ে চীনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। চীন সরকারের এ ধরনের গর্হিত অপরাধ কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবু জাফর কাসেমি, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর শায়খুল হাদীস আব্দুল কাদের কাদেরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা শহিদুল্লাহ আনসারী, ইসলামী মুভমেন্টের চেয়ারম্যান আইনজীবী খায়রুল আহসান, ফেনী আলিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মাহমুদুল হাসান, আলেম মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম সংসদের সভাপতি মুফতি ওসমান গনি চৌধুরী প্রমুখ।

আরও পড়ুন

×