জঙ্গিদের ৮২ শতাংশ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে উদ্বুদ্ধ: এটিইউ

ছবি: সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৩ | ১৭:০৫ | আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩ | ১৯:২৭
রাজধানীতে ‘উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়েছে। সোমবার মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজের মাল্টিপারপাস হলে দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা হলেও এটি মোকাবিলায় সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে আনা সম্ভব হয়নি। অনেক সময় এ ইস্যু দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার চেষ্টা করা হয়। তবে দেশে জঙ্গি দমনে সাফল্য এসেছে। এই সাফল্য নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। তাদের অধিকাংশই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। তাই এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
কর্মশালায় এটিইউর ডিআইজি (প্রশাসন) মফিজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. এ এফ এম মাসুম রব্বানী। এ সময় সংস্থাটির সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) ওয়াহিদা পারভীনের সঞ্চলনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শবনাম আজিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এটিইউর ডিআইজি (অপারেশন) মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়ার্ধে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন প্রথম আলোর হেড অব রিপোর্টিং টিপু সুলতান, সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি সাহাদাত হোসেন পরশ ও ডেইলি স্টারের সিনিয়র রিপোর্টার মোহাম্মদ জামিল খান।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এটিইউ প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি এস এম রুহুল আমিন বলেন, জঙ্গিরা হয়তো ততটা সংগঠিত নয়। তবে তারা বসে নেই। নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় আছে। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে বিপদে পড়ছে অনেক তরুণ। এসব নিয়ে জনসাধারণকে সচেতন করার সুযোগ আছে গণমাধ্যমের।
মনিরুজ্জামান বলেন, দেশের উন্নয়নের বিরুদ্ধের বড় বাধা হলো জঙ্গিবাদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি। জঙ্গিবাদের ৮২ শতাংশই এই প্ল্যাটফর্ম থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছে।
সাংবাদিক টিপু সুলতান বলেন, উগ্রবাদ নিয়ে গণমাধ্যম কতটুকু প্রচার করবে আর কতটুকু করবে না– এখানে উভয় সংকট আছে। কীভাবে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে তরুণ সমাজ, এটা নিয়ে নিউজ করলে অভিভাবকরা সচেতন হতে পারবে। আবার তাদের প্রচারও হয়। এখানে সাংবাদিকদের সোর্স তৈরির সুযোগটা কম। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। এই সুযোগ নিয়ে কোনো অফিসার ভুল তথ্য দিলে উভয়ের প্রতি পাঠক আস্থা হারায়।
সাংবাদিক পরশ বলেন, জঙ্গি কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন করার ক্ষেত্রে প্রতিবেদকের এ বিষয়ে পরিষ্কারভাবে জানাবোঝা জরুরি। জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হয়। উগ্রপন্থিদের পরিবারের কথা মাথায় রাখতে হয়। জঙ্গিবাদ স্পর্শকাতর বিষয় হওয়ার পরও রাজনৈতিক নেতারা এ বিষয়ে একমত হতে পারেননি। হলি আর্টিসানের মতো ভয়াবহ ঘটনার পরও রাজনৈতিক মহলে বিভক্তি রয়ে গেছে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা এখনও কাউন্টার ন্যারেটিভের বিষয়ে জোর দিতে পারিনি।
রিপোর্টার জামিল বলেন, জঙ্গিবাদের বিষয়ে প্রতিবেদন করতে গিয়ে এমন চটকদার শিরোনাম না দেওয়া, যা তাদের পক্ষে যায়। এ ছাড়া জঙ্গিবাদের বিষয়ে তথ্য সব সময় ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে।
- বিষয় :
- অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট
- এটিইউ
- জঙ্গিবাদ