একাত্তরে মানবাবিরোধী অপরাধ
পিরোজপুরের চার রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড

রায়ের সময় তিন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ছবি: সমকাল
আদালত প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৩ | ০৫:৫৬ | আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৩ | ১২:৩৫
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া এলাকার আব্দুল মান্নান হাওলাদারসহ চার রাজাকারকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ (ফাঁসি) দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন- আশরাফ আলী হাওলাদার, হাতকাটা মহারাজ হাওলাদার ও পলাতক নুরুল আমিন হাওলাদার। রায় ঘোষণার সময় একজন পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
২২৮ পৃষ্ঠার রায়ের উল্লেখযোগ্য অংশে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় যে বর্বরতা ঘটেছে সেটা সারা বিশ্বেরই অজানা নয়। তাই অপরাধের বয়স বিবেচনার কোন সুযোগ নেই। বয়সের কারণে অপরাধীরা কোন অনুকম্পা পেতে পারে না। তাই তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গত ১৩ বছরে ৫৩টি রায় দেওয়া হলো।
আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভান্ডারিয়ার স্থানীয় পশারীবুনিয়া গ্রামে ১৮ জনকে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ একাধিক মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। গত ১৮ মে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলার রায় অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়েছিল।
রায়ের পর ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান সমকালকে জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এ মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে ট্রাইব্যুনালে ১৩ জন সাক্ষী দিয়েছেন।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম বলেন, ‘রায়টি ন্যায়বিচার বহির্ভুত হয়েছে। রায়ে আসামিরা ন্যায়বিচার পায়নি। প্রত্যেক আসামি উচ্চ আদালতে আপিল করবে।’ সেখানে তারা ন্যায় বিচার পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রথমে সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর বিভিন্ন সময়ে তিনজন (একজন কারাগারে ও দুইজন পলাতক অবস্থায়) মারা যান। ২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়ে ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর শেষ হয়। চার আসামি মুক্তিযুদ্ধের সময় কনভেনশন মুসলিম লীগের সমর্থক হলেও বর্তমানে তারা জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক।
/এইচকে/
- বিষয় :
- রাজাকার
- ফাঁসি
- আদালত
- মানবতাবিরোধী অপরাধ