ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

চিকিৎসক নির্যাতনের ঘটনায় প্রতিকার না হওয়ার অভিযোগ

চিকিৎসক নির্যাতনের ঘটনায় প্রতিকার না হওয়ার অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এফডিএসআর উপদেষ্ঠা ডা. আব্দুন নূর তুষার। ছবি: সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৪ | ২৩:৩৯

চিকিৎসাজনিত ভুল অস্বাভাবিক নয়। এজন্য রোগীকে ক্ষতিপূরণসহ চিকিৎসকের লাইসেন্স বাতিলের বিধান আছে। আর চিকিৎসক প্রহার ও নির্যাতনের ঘটনাগুলোর কোনো প্রতিকার হয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রশাসন এসব বিষয়ে চোখ বন্ধ করে রাখে। এই বিচারগুলো আপস-মিমাংসা করা হয় প্রশাসন ও একশ্রেণির ডাক্তার নেতাদের মধ্যস্থতায়। আমরা মনে করি, এটি অন্যায়। সেইজন্য রোগী ও চিকিৎসক উভয়ের স্বার্থে এই অভিযোগগুলোর সমাধান হওয়া জরুরি। এছাড়াও চিকিৎসক ও রোগীদের স্বার্থে সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরাসহ উন্নত নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের দাবিও জানানো হয়।

আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সিবিলিটিজের নেতারা (এফডিএসআর) সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
‘স্বাস্থ্য খাতে সাম্প্রতিক অস্থিরতা ও উত্তরণের পথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের উপদেষ্ঠা ডা. আব্দুন নূর তুষার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর চেয়ারম্যান ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন, মহাসচিব ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডা. রাহাত, ডা. শাহেদ ইমরান প্রমুখ।

সংগঠনের উপদেষ্ঠা ডা. আব্দুন নূর তুষার বলেন, ঢাকা দেশে ব্যাঙয়ের ছাতার চেয়েও বেশি রাজনৈতিক ও অন্যান্য বিবেচনায় অনুমোদিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর মান নিয়ন্ত্রণ না করে আসনবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বিধ্বংসী। শাহ মখদুম, নাইটিংগেল, নর্দার্ন, কেয়ার মেডিকেলের মতো বহু মেডিকেল কলেজ আছে যেখানে শিক্ষক স্বল্পতা-উপকরণ স্বল্পতা ও মানহীনতা আছে। এসব বন্ধ না করে খাবার দোকান বন্ধ করে লাভ হবে না। কারণ, এসব মেডিকেল থেকে বের হওয়া মানহীন চিকিৎসকদের হাতে অদুর ভবিষ্যতে সবাই অনিরাপদ হয়ে পড়বে।

তিনি বলেন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে মূল অভিযুক্ত চিকিৎসককে বাদ দিয়ে জরুরি চিকিৎসা দিতে আসা চিকিৎসককে জামিন না দেওয়া ও সহকারীদের আটক করে রাখা চিকিৎসকদের প্রতি ন্যয়সংগত আচরণ ছিল না। পেশাগত অন্যায় বিচার করার কাজ প্রাথমিকভাবে পেশাগত মান নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের তথা বিএমডিসির। আমরা মনে করি, বিএমডিসিকে শক্তিশালী করে এই সমস্যাগুলোর যথাযথভাবে প্রতিকার করা সহজ।

ডা. আব্দুন নূর তুষার বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ রোগের চিকিৎসায় স্ট্যান্ডার্ড কোনো ট্রিটমেন্ট প্রটোকল তৈরি হয়নি। সম্প্রতি মুসলমানি ও এন্ডোস্কোপি করতে গিয়ে অজ্ঞান করা নিয়ে উদ্ভুত জটিলতায় যে তিনজন রোগীর মৃত্যু হলো- তা আমাদের ট্রিটমেন্ট প্রটোকলের প্রয়োজনীয়তার বুঝিয়ে দিয়েছে। চিকিৎসা প্রদানের ক্ষেত্রে ‘স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাক্টিস’ অনুসরণ করলে চিকিৎসকদের বিরূদ্ধে ঢালাওভাবে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক নির্যাতনের ঘটনায় কোনো প্রতিকার হয় না। প্রশাসন এসব বিষয়ে চোখ বন্ধ রাখে। এই বিচারগুলোর আপস-মিমাংসা করা হয় প্রশাসন ও তথাকথিত ডাক্তার নেতাদের মধ্যস্থতায়, যা অন্যায়।

কোভিডজনিত মৃত্যুর ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতির বিষয়ে রহস্যজনক নীরবতা ভবিষ্যত মহামারী এলে চিকিৎসকদের কাজে অনিহার কারণ হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনে গড়িমসির জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানান ডা. আব্দুন নূর তুষার।

এছাড়া এফডিএসআরের পক্ষ থেকে ডাক্তারদের বেসরকারি চাকরিতে ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ, বেসরকারি হাসপাতালে শ্রম আইনের আলোকে স্ট্যান্ডার্ড সার্ভিস রুল প্রণয়ন করারও দাবিও জানানো হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।

আরও পড়ুন

×