শহীদ বুদ্ধিজীবীর স্বীকৃতি পেলেন ‘মধুদা’

মধুর ক্যানটিনের সামনে মধুসূদন দে’র ভাস্কর্য। ছবি: সংগৃহীত
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৪ | ০১:০৫ | আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৪ | ০৮:৩২
মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নতুন তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। চতুর্থ পর্বে প্রকাশ করা এই তালিকায় ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সেখানে রয়েছে মধুসূদন দের নাম। তিনি ‘মধুদা’ নামেই বেশি পরিচিত।
রোববার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
মধুসূদন দে কোনো শিক্ষক, লেখক, গবেষক বা শিল্পী নন। তিনি ছিলেন একজন চায়ের দোকানি। কিন্তু স্বাধিকার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ভূমিকায় তার প্রভাব ছিল। তাই পেশাগত পরিচয়ের বাইরে গিয়ে ব্যতিক্রমীভাবে তাকে শহীদ বুদ্ধিজীবীর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের বর্বর কালরাতে হানাদার বাহিনী তাকে জগন্নাথ হল থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং সেই রাতেই তাকে হত্যা করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কলাভবনের উত্তর-পূর্বদিকে যে রেস্তোরাঁ, সেটি মধুদার নামেই নামকরণ করা হয়েছে। সেই রেস্তোরাঁ এখন সবার কাছে ‘মধুর ক্যান্টিন’ নামে পরিচিত।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা দু’এক জায়গায় ব্যতিক্রম করেছি। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুদা, ইনি শিক্ষক, লেখক কিংবা গবেষকও না, শিল্পীও না। উনি এমন একজন ব্যক্তি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবাই ওনাকে চেনেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক দেশ স্বাধীন সংক্রান্ত যত আন্দোলন হয়েছে, সেখানে ওনার একটা অনন্য ভূমিকা ছিল। ওনার যে অবদান ২৩ বছরে যত নেতাকর্মী দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন, উনি তাদের সহযোগিতা করেছেন।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ উদাহরণ হচ্ছে মধুদাকে বুদ্ধিজীবী হিসেবে বিবেচনা করা। জাতির পিতাই মধুদাকে শহীদ বুদ্ধিজীবী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। মধুদা একজন ছাত্রবৎসল মানুষ ছিলেন। তিনি ছাত্রদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করতেন। তাদের লেখাপড়া এবং অন্যান্য বিষয়ে ছিল তার অসামান্য অবদান।
আরও জানানো হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসের বিখ্যাত সব রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের নিকট মধুদা ছিলেন কিংবদন্তীতুল্য। মধুদা তার ক্যান্টিন ব্যবসা থেকে প্রাপ্ত আয় থেকে তার গ্রামের সাধারণ মানুষদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন। তিনি এলাকায় সমাজসেবক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তাই আলোচনা শেষে শহিদ বুদ্ধিজীবীর সংজ্ঞার আলোকে মধুসূদন দেকে সমাজসেবী হিসেবে পেশাভুক্ত করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
- বিষয় :
- বুদ্ধিজীবী
- মুক্তিযোদ্ধা