‘আরএসএফ’র র্যাঙ্কিং পদ্ধতির গলদ ফের তুলে ধরব: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৪ | ১৮:৫৮
বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা র্যাঙ্কিং পদ্ধতির গলদ ও ভুল গতবারের মতো এবারও তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
রোববার সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত অ্যান্তোনিও আলেসান্দ্রোর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা র্যাঙ্কিং সূচকে বাংলাদেশ গত বছরের তুলনায় দুই ধাপ পিছিয়েছে। গত শুক্রবার (৩ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) ২০২৪ সালের এই সূচক প্রকাশ করে। সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৫তম।
এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, বিষয়টি দেখেছি। এবার যে রিপোর্টটি এসেছে তা গত বছরের পারফরম্যান্সের রিপোর্ট। তাদের নির্ণয় প্রক্রিয়ায় তারা কোনো পরিবর্তন আনেনি। একই জায়গায় রেখেছে। স্টাডিগুলো করতে যে ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, সেই পদ্ধতিতে তারা করেছে কিনা দেখবেন।’
তিনি বলেন, ১০-১২ জনকে একাট্টা করে মতামত নিয়ে একটা র্যাঙ্কিং করে দিলেন। এটা তো একটা দেশের চিত্র হতে পারে না। ওই মানুষগুলোর মতামত হতে পারে। মতামতগুলো কার কাছ থেকে নিচ্ছেন, কতজনের কাছ থেকে নিচ্ছেন, এটার কোনো স্বচ্ছতা নেই। খুব দুর্বল একটা পদ্ধতি, এটা দিয়ে সেটা দিয়ে রিফ্লেকশন হয় না।’
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে আমি মরিশাস ঘুরে এসেছি। ওখানে সরকারি ছাড়া প্রাইভেট কোনো গণমাধ্যকম নেই। র্যাঙ্কিংটা দেখেন, তারা বাংলাদেশের ওপরে না নিচে। ভুটানে ২-৩টা চ্যানেল আছে, সবই সরকারি। সেখানে বাংলাদেশে ৪৮টি ইলেকট্রনিক মিডিয়া আছে, ভুরি ভুরি প্রিন্ট মিডিয়া আছে। অনলাইনের সীমা-পরিসীমা নেই। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের পরিধি ১০ গুণ বেড়েছে। ভাইব্রেন্ট একটা গণমাধ্যমের পরিবেশ, এখানে কমপ্লেক্স রিয়েলিটি তো থাকবেই, খুবই স্বাভাবিক।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা বিভিন্ন জায়গায় শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা করছি। সেটাকে অ্যাপ্রিসিয়েট করতে হবে। সেখানে কমপ্লেক্স রিয়েলিটিগুলো ধরে এমনভাবে র্যাঙ্কিং করছেন যেটা সত্য পরিবেশের আসল চিত্র তুলে ধরতে পারছে না। সেই র্যাঙ্কিং পদ্ধতিতে নিশ্চয়ই গলদ আছে, ভুল আছে। সেই জিনিসটা আমরা তুলে ধরেছি, আবার তুলে ধরব।
শুধু পদ্ধতিগত নয়; গত রিপোর্টে তারা কিছু ভুল তথ্যও দিয়েছিল জানিয়ে মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘৬ জন নাকি ডিটেইনশনের শিকার হয়েছেন। আমরা যখন বলেছি, এটা ভুল, তখন তারা এটা সরিয়ে ফেলেছে। তারা যে সরিয়ে ফেলল, এতে তারা স্বীকৃতি দিয়েছে যে, তারা ভুল ছিল। ভুল তথ্য তারা যাচাই না করে কেন ছাপিয়েছিল? এরপর আবার যে ৬ জনের নাম ঢুকিয়েছে, সেখানেও ভুল আছে। সেটাও আমি তাদেরকে উত্তর দেব।
তিনি বলেন, বার বার যদি তারা এ কাজটা করে তাহলে তাদের বুঝতে হবে এখান থেকে কাদের তথ্য নিয়ে তারা রিপোর্ট বানাচ্ছে। যারা তথ্য দিচ্ছে তারা সততার সাথে দিচ্ছে নাকি তাদের কোনো এজেন্ডা আছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আরএসএফের র্যাঙ্কিংকে আমি স্বাগত জানাই, এ ধরণের র্যাঙ্কিং করা ভালো। তাহলে গোটা বিশ্বের একটা চিত্র আমরা পাব। কিন্তু বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হয়ে যাবে যদি সেটাতে পদ্ধতিগত দুর্বলতা থাকে। যারা তথ্য দিচ্ছে তারা যদি ভুল তথ্য দেয়, সেটা যাচাই না করে ছাপিয়ে দিলেই এটা বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।
রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্য ও গুজব রোধে কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারি, সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা আমার সঙ্গে একমত হয়েছে। অপতথ্য রোধে তারা আমাদের পূর্ণ সহযোগিতা করবেন। আমরাও তাদের সমর্থন করব।’
- বিষয় :
- মোহাম্মদ এ আরাফাত
- তথ্য প্রতিমন্ত্রী