ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ

‘আমার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা সরকারকে হেয় করার চেষ্টা’

‘চ্যালেঞ্জ করছি, আমার ভাইদের ঠিকাদারি কাজ পেতে সহায়তা করিনি’

‘আমার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা সরকারকে হেয় করার চেষ্টা’

সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ- সংগৃহীত ছবি

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ মে ২০২৪ | ২০:৩১ | আপডেট: ২২ মে ২০২৪ | ০৯:৪৫

‘সামরিক (বাহিনী) বা বিজিবিতে ঠিকাদারি কাজ পেতে আমার কোনো ভাইকে সহায়তা করিনি। সেনাপ্রধান ও বিজিবির ডিজি হিসেবে মোট সাত বছর ছিলাম। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার কোনো ভিত্তি নেই।’ মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর গতকাল মঙ্গলবার সমকালকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

তিনি বলেন, ২০২১ সালে আলজাজিরায় ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ নামক একটি নাটক মঞ্চায়ন করা হয়েছিল। সেখানে কিছু গালগল্প বিস্তারিতভাবে বলা হয়। এবার মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে তার মধ্যে দুটি অভিযোগ আনা হয়। আলজাজিরার গল্পের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। দুটি বিষয় একই সূত্রে গাঁথা।

আরেক প্রশ্নের জবাবে সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, আমি রাজনৈতিক লোক নই। তাই এ নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা আছে কিনা বলতে পারব না। নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি যদিও ব্যক্তিগত, তবে বর্তমান সরকারের সময়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। তাই নিষেধাজ্ঞা সরকারকেও হেয় করার অপচেষ্টা হতে পারে।

তিনি বলেন, কেউ যদি তদন্ত করে আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ আনতে পারে যে বিজিবি অথবা সেনাবাহিনীতে আমার কোনো ভাইকে কন্ট্রাক্ট দিয়েছিলাম, যে ধরনের মিলিটারি কন্ট্রাক্টের কথা (মার্কিন নিষেধাজ্ঞায়) বলা হচ্ছে, তাহলে এর পরিণতি ভোগ করতে প্রস্তুত। আমার কোনো ভাইকে বা কোনো আত্মীয়কে বিজিবি বা সেনাবাহিনীতে কোনো কন্ট্রাক্ট দিইনি।

আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর ভাইকে বাংলাদেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সহযোগিতা করেন। এটি করতে গিয়ে তিনি নিয়মবহির্ভূত প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন।

এ অভিযোগের ব্যাপারে আজিজ আহমেদ বলেন, আমার যে ভাইয়ের কথা বলা হচ্ছে, সে ২০০২ সাল থেকে দেশের বাইরে। বৈধ কাগজপত্র নিয়ে গেছে। আমার ভাইকে অফিসিয়াল ক্যাপাসিটি ব্যবহার করে প্রচলিত নিয়মকানুন পাশ কাটিয়ে সহযোগিতা করেছি– এ অভিযোগ মেনে নিতে পারছি না। এটি আমার জন্য প্রযোজ্য নয় বলে মনে করি।

সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, ডয়চে ভেলেতে আগেও যখন সাক্ষাৎকার দিয়েছিলাম তখন বলেছি, আমার কোনো ভাইকে কোনো কন্ট্রাক্ট দিয়েছি, এর কোনো প্রমাণ কেউ আমাকে দেখাতে পারবে না। এবারও বলছি, এমন অভিযোগ কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। তথ্য-প্রমাণ ছাড়া এমন অভিযোগ আনা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমার যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, মানে আমি যেতে পারব না। ঠিক আছে, গেলাম না। আমেরিকা যেতেই হবে এমন কোনো কথা আছে! কিন্তু সত্যিকার অর্থে এটা বিব্রতকর। আমেরিকা কেন করল, আমি জানি না। এটা অপ্রত্যাশিত। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, অবাক ও মর্মাহত হয়েছেন এবং বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। যে দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য নয়; মিথ্যা।

আইনগত কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে কিনা– এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি সে রকম মনে করছি না। আমি নিশ্চিত, এটা সাধারণ মানুষ বুঝবে।

মার্কিন দূতাবাসকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাবেন কিনা– এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কেন? না, আমার জানানোর কোনো প্রয়োজন নেই।

জেনারেল আজিজ আরও বলেন, আমি আবারও জোর দিয়ে বলছি, আমি সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এমন কোনো কাজ করিনি, যার জন্য আমার এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা পেতে হবে।

আরও পড়ুন

×