সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিসর বাড়াতে হবে

দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে ‘সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি: বৈষম্য ও অধিকার’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে আলোচকরা। ছবি: সংগৃহীত
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৪:১৮
বিদ্যমান বৈষম্য কমিয়ে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিসর বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজন। তারা বলেছেন, জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশলপত্র (এনএসএসএস) নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। তবে কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীদের বাছাই প্রক্রিয়া ও সুবিধা বণ্টনে অনিয়ম ও বৈষম্য রয়েছে। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির অধীন কার্যক্রমগুলোর যথাযথ তদারকিও হয় না। নির্দিষ্ট সময়ের পর উপকারভোগীদের অবস্থার মূল্যায়নের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী পরিকল্পনা প্রণয়নের তেমন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বা ব্যবস্থা নেই। ফলে সংখ্যাগত দিক থেকে মানুষের দারিদ্র্যের উন্নয়ন-সংক্রান্ত যথাযথ বা সঠিক পরিসংখ্যান নেই।
গতকাল বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার সেন্টারের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে ওয়েভ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি: বৈষম্য ও অধিকার’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে তারা এসব কথা বলেন। সংলাপ আয়োজনে সহযোগিতা করে এশিয়া ফাউন্ডেশন।
ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলীর সভাপতিত্বে সংলাপে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আসিফ এম. শাহান। প্রকল্পের পক্ষে বক্তব্য দেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রকল্প সমন্বয়কারী মীর মোস্তাক আহমেদ। আরও বক্তব্য দেন মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের পরিচালক জাকিয়া আফরোজ, ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এমএম আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলাম জাহিদ, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক ড. এসএম জুলফিকার আলী, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (নিবন্ধন) আইয়ুব খান, কেয়ার বাংলাদেশের চিফ অব পার্টি আমানুর রহমান প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন ও সঞ্চালনা করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক কানিজ ফাতেমা। এ ছাড়া যুব, ছাত্র ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।
জাকিয়া আফরোজ বলেন, সরকার ভিডব্লিউবির মাধমে নারী ও শিশু সুরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। তবে কর্মসূচি বাস্তবায়নে এখনও প্রয়োজনীয় মূল্যায়ন হয়নি। এর ফলে আমাদের প্রকৃত উপকারভোগীর সংখ্যা নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সুবিধাভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সঠিক মানুষকে নির্বাচিত করতে পারাটাও বিবেচনায় নিতে হবে।
এমএম আকাশ বলেন, আমরা সামাজিক সুরক্ষা কাকে দিতে চাচ্ছি, প্রকৃত উপকারভোগী লক্ষ্য অনুসারে কর্মসূচির আওতায় আসছে কিনা, এ বিষয়গুলো অস্পষ্ট।
এসএম জুলফিকার আলী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে সুযোগ এসেছে সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের ক্ষেত্রে নির্মোহভাবে তালিকা তৈরির ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার। নিরাপত্তা বেষ্টনীর সেবাগুলোকে যত ডিজিটালাইজেশন করা যাবে, বাস্তবায়ন ও জবাবদিহির প্রক্রিয়া তত স্বচ্ছ হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মহসিন আলী বলেন, ওয়েভ ফাউন্ডেশন টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু ন্যায্যতা, সুশাসন, অধিকার ও ন্যায্যতার বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে। বৈষম্যের বিরুদ্ধে যে সাফল্য এসেছে, সে ক্ষেত্রে আমাদের পদ্ধতিগত সংস্কার এবং তা বাস্তবায়ন সময়ের দাবি।
সংলাপে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচিতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করা, প্রকৃত উপকারভোগীদের নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং সংস্কারের ক্ষেত্রে দায়কে গুরুত্ব দেওয়াসহ বেশ কিছু সুপারিশ উত্থাপন করা হয়।