বিমানবন্দর থানা শ্রমিক লীগের দেলোয়ার এখন শ্রমিক দলে
রাজনৈতিক খোলস পাল্টিয়ে দখল-চাঁদাবাজি

ছবি: সংগৃহীত
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪ | ১৯:৩০ | আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪ | ২০:২৪
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সুবিধাবাদী ও সুযোগ সন্ধানী কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক খোলস পাল্টিয়ে চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় শ্রমিক লীগের পদে থাকা রাজধানীর বিমানবন্দর থানার দেলোয়ার হোসেন দেলু রাতারাতি বনে গেছেন শ্রমিকদলের নেতা হিসেবে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীসহ বিভিন্ন থানায় বিভিন্ন অভিযোগে মামলা আছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
পুলিশ জানায়, বিমানবন্দর থানার শ্রমিকলীগের তালিকা অনুযায়ী দেলোয়ার হোসেন কমিটিতে দপ্তর সম্পাদক। বর্তমান রাজনৈতিক সুর পাল্টে পূর্বের পদ-পদবি গোপন করে নিজেকে শ্রমিক দলের নেতা পরিচয় দিয়ে বিমানবন্দর রেন্ট-এ-কার কাউন্টার ব্যবসা দখল করতে রেন্ট-এ-কার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। সম্প্রতি ওই রেন্ট-এ-কার মালিক–কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলাও করেন তিনি। পরে আদালতের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী বিমানবন্দর থানায় তার ওই মামলা রুজু করা হয়েছে।
বিমানবন্দর থানার মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, দেলোয়ার হোসেন দেলু ২০১০ সালে বিমানবন্দর থানা শ্রমিকলীগের কমিটিতে দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি ২০২৪ সালের জাতীয় শ্রমিক লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির একজন কার্যকরী সদস্য হিসেবে আছেন। এরপরও দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সুবিধাবাদী হিসেবে খোলস পাল্টেছেন তিনি। বর্তমানে নিজেকে শ্রমিক দল নেতা হিসেবে পরিচয় দেন সবার সামনে।
এ মামলায় বাদী দেলোয়ার হোসেন উল্লেখ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শ্রমিক লীগের নেতা নুরুল ইসলাম গং গুলশানে খালেদা জিয়ার বাড়ি অবরুদ্ধ করে রাখার জন্য দেলুকে গুলশানের বাড়ির সামনে বালু ভর্তি দুটি ট্রাক দিতে হবে অথবা নগদ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করে। বাদী শ্রমিক লীগের নেতাদের দাবি না মানায় তার উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয় এবং পা ভেঙে দেয়।
তিনি সুস্থ হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে থানার ওসি বিএম ফরমান আলী তার মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান। তবে বিমানবন্দর থানায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুলিশ পরিদর্শক বিএম ফরমান আলী ২০১৩ সালে বিমানবন্দর থানায় ওসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন না। সে সময় তিনি মতিঝিল থানার ওসি হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চাঁদার দাবিতে বিমানবন্দর রেন্টে কার পরিবহন কাউন্টার ভাঙচুর লুটপাটের ঘটনা সমকালকে অস্বীকার করেন দেলোয়ার। তিনি বলেন, আমি বিমানবন্দর শ্রমিক লীগের সঙ্গে কখনই সম্পৃক্ত ছিলাম না। দেলোয়ার হোসেন নামে আরও অনেক লোক রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শ্রমিকলীগের লোকজন যড়যন্ত্রমূলক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে।
এ ব্যাপারে বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমকালকে জানান, বিমানবন্দর থানা শ্রমিকলীগের কমিটিতে দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দেলোয়ার হোসেনের নাম রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির একজন কার্যকরী সদস্য হিসেবে তার নাম আছে বলেও পুলিশ জানায়।
- বিষয় :
- শ্রমিক লীগ নেতা
- চাঁদাবাজি