ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

ছবিতে, দলিলে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু

ছবিতে, দলিলে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু

রাজধানীর গুলশান সোসাইটি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে ‘হিউম্যানিটি ইজ ওয়ান’ শিরোনামে চলছে চিত্র ও দলিলপত্র প্রদর্শনী। তিন দিনের এ আয়োজন চলবে আজ শুক্রবার রাত ৯টা পর্যন্ত - সমকাল

 সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫ | ০০:৩৯

মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা প্রবলভাবে নাড়া দিয়েছিল বিশ্ব মানবতাকে। বিবেকের তাড়নায় ওই সময় অনেক বিদেশি এগিয়ে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম যুক্তরাজ্যের অধ্যাপক পল কনেট ও এলেন কনেট দম্পতি। বিদেশ থেকে ত্রাণ পাঠানোর পাশাপাশি বৈশ্বিক মহলে বাংলাদেশের স্বীকৃতি আদায়েও বড় ভূমিকা রাখেন তারা। এমনকি বাংলাদেশে ত্রাণ দিতে এসে এ দম্পতি গ্রেপ্তার হন পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে। পাকিস্তানের সামরিক আদালত তাদের দুই বছরের কারাদণ্ডও দেন। পরে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে মুক্তি মেলে তাদের। 

স্বাধীনতার ৫৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে সেই পল-এলেন দম্পতিকে নিয়ে রাজধানীর গুলশানের লেক পার্কে চলছে তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনী। এতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ব্রিটিশ এ দম্পতির ভূমিকার ৯৭টি চিত্র ও অন্যান্য প্রামাণিক দলিল স্থান পেয়েছে। গত বুধবার প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করেন যুক্তরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যান ও জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার। গুলশান সোসাইটি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে ‘হিউম্যানিটি ইজ ওয়ান’ শিরোনামে এ প্রদর্শনী চলবে আজ শুক্রবার রাত ৯টা পর্যন্ত। 

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক জানান, পল-এলেন দম্পতি মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পরপরই লন্ডনের ক্যামডেন এলাকায় ‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’ নামে একটি কার্যালয় খোলেন। পরে বাংলাদেশে খাদ্যসামগ্রী ও ওষুধপত্র পাঠানোর জন্য ‘অপারেশন ওমেগা’ নামে আরও একটি সংস্থা খোলেন তারা। পাকিস্তানি সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জনমত গঠনে ১ আগস্ট লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে বিশাল জনসভার আয়োজনেও ছিল তাদের বড় ভূমিকা। 
মফিদুল হক আরও বলেন, শুধু ত্রাণ সংগ্রহ নয়, তা দিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন পল কনেট। পরে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। ১০ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত হওয়ার পর তারা ছাড়া পান। 

গুলশান সোসাইটির মহাসচিব সৈয়দ আহসান হাবীব বলেন, তরুণ প্রজন্মের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মূল্যবোধের দিকে লক্ষ্য রেখে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। মুক্তিকামী বাঙালিদের পক্ষে শত বাধা উপেক্ষা করে বিদেশি বন্ধুরা কীভাবে এগিয়ে এসেছিলেন, সেটা তরুণদের জানানোই এর মূল লক্ষ্য। 
সোসাইটির সদস্য গীতাঙ্ক দেবদীপ দত্ত সমকালকে বলেন, প্রদর্শনীতে মূলত সোসাইটির সদস্যের সন্তানদের উপস্থিতি বেশি। সর্বসাধারণও আসছে। যারা আসছেন তারা মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের নতুন এক গল্প জানতে পারছেন। 
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৩ সালে পল-এলেন দম্পতিকে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা দেয় বাংলাদেশ। 

আরও পড়ুন

×