জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস, রায় বাতিল

জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম- ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫ | ১০:২৪ | আপডেট: ২৭ মে ২০২৫ | ১৫:২৬
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে এ রায় দেওয়া হয়।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রায় দেন।
দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামি আপিল বিভাগের রায়ে খালাস পেলেন। আজহারুল ইসলামকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে দেওয়া সাজা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই রায়ের ফলে আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
রায় ঘোষণাকালে আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, প্রথমত, অতীতের রায়ে বাংলাদেশসহ এই ভারতীয় উপমহাদেশে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার পদ্ধতি পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছিল, এটা ছিল সবচেয়ে বড় ভুল। দ্বিতীয়ত, আদালতের সামনে উপস্থাপিত সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করা ছাড়াই এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছিল। তৃতীয়ত, পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি ট্রাভেস্টি অব ট্রুথ অর্থাৎ বিচারের নামে অবিচার। চতুর্থত, যে সমস্ত তথ্য প্রমাণ আদালতে হাজির করা হয়েছিল, অতীতের আপিল বিভাগ তা সঠিকভাবে বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এটিএম আজহারুলকে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাজা হওয়ার পর এটাই প্রথম কোনো মামলা যেখানে আপিল বিভাগের রায় রিভিউ শুনানি পর আসামিকে মূল মামলায় আপিল করার অনুমতি দেওয়া হয়।
জামায়াত নেতা আজাহারুলের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুর অঞ্চলে ১২৫৬ ব্যক্তিকে গণহত্যা-হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শতশত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো নয় ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এসব অপরাধে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হলেও ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। এরপর ওই রায় রিভিউ চেয়ে আজাহরুল আপিল বিভাগে আবেদন করেন।