বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর উদ্ভাবন
গবাদিপশুর পেটের মিথেন রোধ করবে ছত্রাক

ছবি-সংগৃহীত
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫ | ১৭:৫৮
জলবায়ু পরিবর্তনের বড় কারণগুলোর একটি হলো মিথেন গ্যাস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেখানে এ গ্যাস কমাতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে এক বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর মাধ্যমে উঠে এসেছে নতুন সম্ভাবনা। গবাদিপশুর হজম প্রক্রিয়ায় মিথেন উৎপাদন রোধে একটি প্রাকৃতিক ছত্রাক উদ্ভাবন করেছেন জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী। এ ছত্রাক ব্যবহারে গবাদিপশু থেকে নির্গত মিথেন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসবে বলে দাবি করেছেন তিনি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ উদ্ভাবনের কথা জানান ড. আবেদ। এর আয়োজন করে রোম, কৃষাণ ফাউন্ডেশন, মেধাসম্পদ সুরক্ষা মঞ্চ (মেধাসুম) ও জ্যাকফ্রুট পোস্ট।
ড. আবেদ জানান, গরু, ছাগল, মহিষের মতো জাবরকাটা প্রাণীর পেটে খাবার হজমের সময় গ্যাস তৈরি হয়। ঢেঁকুর, নিশ্বাস ও মলমূত্রের মাধ্যমে এ গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে যায়। এর বড় অংশ হলো মিথেন। বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর গবাদিপশু থেকেই নির্গত হয় প্রায় ১০০ মিলিয়ন টন মিথেন। বাংলাদেশে প্রতিবছর নির্গত হয় প্রায় ৩০ মিলিয়ন টন মিথেন।
ড. আবেদ বলেন, আমাদের উদ্ভাবিত ছত্রাক পশুখাদ্যের সঙ্গে মিশিয়ে দিলে তা হজম প্রক্রিয়ায় কাজ করে এবং মিথেন গ্যাস তৈরি হওয়া বন্ধ করে। এটি পুরোপুরি প্রাকৃতিক, কোনো জেনেটিক পরিবর্তন করা হয়নি এবং পশুর স্বাস্থ্যের ওপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না।
এই গবেষণা ২০২৬ সালের মার্চ মাসে বায়োটেকনোলজি রিপোর্টস সাময়িকীতে প্রকাশিত হবে। এরই মধ্যে গবেষণার ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে রোম এগ্রিকালচার নামে একটি নতুন প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, দেশের খামারিরা নিজেরাই ছোট ইউনিটে এ ছত্রাক উৎপাদন করতে পারবেন, যা প্রযুক্তিকে গ্রামপর্যায়ে সহজে পৌঁছে দেবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সঠিক প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গবাদিপশুর মিথেন নির্গমন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সবুজ অর্থনীতির সম্ভাব্য বাজারমূল্য দাঁড়াতে পারে ১.৫ বিলিয়ন ডলার।
মেধাসুমের সহসভাপতি শামসুল হুদা বলেন, এ প্রযুক্তি আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয় মোকাবিলায় অনেক এগিয়ে দেবে। ই-কমার্স উদ্যোক্তা এ কে এম ফাহিম মাশরুর বলেন, এই উদ্ভাবন শুধু পরিবেশ রক্ষা নয়, কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা তৈরির ক্ষেত্রেও নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।