ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

ব্যবসা রাজনীতিতে, রাজনীতি ব্যবসায় পরিণত হলে দেশ এগোবে না

গোলটেবিল আলোচনায় বদিউল আলম মজুমদার

ব্যবসা রাজনীতিতে, রাজনীতি ব্যবসায় পরিণত হলে দেশ এগোবে না

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫ | ২১:৩৯ | আপডেট: ২৮ মে ২০২৫ | ২১:৪০

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, রাজনৈতিক অঙ্গনকে দুর্বৃত্তমুক্ত করতে কাজ করতে হবে। স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী না করলে টাকার খেলায় দুরূহ সমস্যা তৈরি হয়। ব্যবসা রাজনীতিতে আর রাজনীতি ব্যবসায় পরিণত হলে দেশ-জাতি এগোবে না। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিজ (সিপিএস) ও ইউনিভার্সিটি স্টাডি ফোরাম (ইউএসএফ) আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। 

‘দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও ফ্যাসিবাদমুক্ত রাষ্ট্র গঠনে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনে জাতীয় ঐকমত্য’ শীর্ষক এই আলোচনায় দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং রাষ্ট্র পরিচালনার কাঠামো নিয়ে গভীর আলোচনা হয়। বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাজনীতি যখন ব্যবসার মাধ্যমে প্রভাবিত হয় এবং ব্যবসা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, তখন দেশ ও জাতির উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী না হওয়ায় টাকার দাপটে রাজনৈতিক অঙ্গন দুর্বৃত্তদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে, যা জাতীয় উন্নয়নের পথে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ নুরুল আমিন ব্যাপারী, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক  ফজলে ইলাহি, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. সফি উল্লাহ, রাওয়া ক্লাবের চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) আব্দুল হক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সাবেক গবেষণা পরিচালক কর্নেল (অব.) জেড আর এম আশরাফ উদ্দিন, ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব মিরাজ মিয়া এবং সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মো. তালহা।

আলোচকরা বলেন, সচিবালয় এবং রাষ্ট্রযন্ত্রকে এখনও কেন ফ্যাসিবাদমুক্ত করা যায়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। গুম, খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার দৃশ্যমান করতে হবে। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল গঠন জরুরি।

তারা আরও বলেন, রাজনীতিতে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সংবিধানে এমন সংস্কার আনতে হবে, যাতে একজন ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে না পারেন এবং স্বজনপ্রীতির সুযোগ বন্ধ হয়। নির্বাচনী বিধিমালা সংস্কার করে অকার্যকর রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন বাতিল এবং নতুন আঞ্চলিক রাজনৈতিক শক্তিকে সুযোগ দেওয়ার কথাও আলোচনায় উঠে আসে।

সবশেষে বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশ বাধ্যতামূলক করতে হবে, যেন স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয় এবং গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত হয়।
 

আরও পড়ুন

×