ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

রাখাইনে মানবিক করিডোর নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: গোয়েন লুইস

রাখাইনে মানবিক করিডোর নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: গোয়েন লুইস

ডিক্যাব আয়োজিত ‘ডিক্যাব টকে’ জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫ | ১৮:৪৬ | আপডেট: ০৫ জুন ২০২৫ | ০১:৫৭

রাখাইনে মানবিক করিডোরে জাতিসংঘের যুক্ততা নিয়ে সংগঠনটির আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেছেন, আন্তঃসীমান্ত সম্পর্ক উন্নয়ন, সংঘাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের সহায়তা করার জন্য যে কোনো ধরনের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। এ বিষয়ে জাতিসংঘ সহায়তা করবে। কিন্তু এ ধরনের কোনো মানবিক করিডোর নেই। আমরা করিডোর-সংক্রান্ত কোনো ধরনের আলোচনায়ও নেই।

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের ‘ডিক্যাব টকে’ এ কথা বলেন জাতিসংঘের এ প্রতিনিধি। ডিক্যাব সভাপতি একেএম মঈনুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক বলেন, মানবিক করিডোর একটি আনুষ্ঠানিক ও আইনি বিষয়। এ ক্ষেত্রে দুটি সার্বভৌম দেশ– বাংলাদেশ সরকার এবং মিয়ানমার সরকার এবং প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট অন্য পক্ষদের আনুষ্ঠানিক সম্মতি থাকতে হবে। যদি এখানে কোনো চুক্তি হয়, তবে জাতিসংঘ সহায়তা করতে পারে। আমি যতদূর বুঝতে পারছি– এ ধরনের চুক্তি এখন পর্যন্ত হয়নি।

তিনি বলেন, করিডোর দুই সরকারের বিষয়। এটি প্রতিষ্ঠিত হলে জাতিসংঘ সহায়তা করতে পারে। রাখাইনে প্রবেশ করা খুব দুরূহ। সেখানে সংঘাত চলছে এবং পরিস্থিতি অনিশ্চিত। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে ইউএনডিপি ও ইউএনএইচসিআরের মধ্যে সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি সমঝোতা ছিল। এটি চালু রয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়ছে।

আওয়ামী লীগ না থাকলেও জনগণের অংশগ্রহণ সঠিকভাবে হলে আগামী নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন লুইস। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে জাতিসংঘের কাছে অন্তর্ভুক্তি মানে হচ্ছে, প্রত্যেক বাংলাদেশি যেন মতামত দেওয়ার সুযোগ পায়।
 
আওয়ামী লীগ না থাকা অবস্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করলে গোয়েন লুইস বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন মানে হচ্ছে, সমাজের প্রত্যেক অংশই যেন ভোট দিতে পারে। নারী, ১৮ বছর বয়সী, নৃতাত্ত্বিক, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়– অন্তর্ভুক্তিমূলক দিয়ে আমরা এটাই বোঝাই। তবে প্রত্যেকের যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রবেশাধিকার ও সক্ষমতা থাকে।

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বা বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কোনো মন্তব্য করছি না। জাতিসংঘ রাজনীতিতে সম্পৃক্ত নয়। 

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ না করার সুপারিশের মধ্যেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ নিয়ে গোয়েন লুইস বলেন, আমরা সুপারিশ করেছি, কারণ সব দলের অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে মেরূকরণ এবং সম্ভাব্য সংঘাত এড়ানো যায়। এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, সরকারের সিদ্ধান্ত।

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় চালুর বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। সরকারের সংস্কার উদ্যোধগে জাতিসংঘের সমর্থন অব্যাহত রাখার কথাও জানান এ কূটনীতিক।


 

আরও পড়ুন

×