এমএসএফের প্রতিবেদন
ধর্ষণ, গণপিটুনিতে হত্যা বেড়েছে জুনে
৪৯টি অজ্ঞাতপরিচয় লাশ উদ্ধার

প্রতীকী ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৫ | ০১:২৩
দেশে জুন মাসে অন্তত ৬৩টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। মে মাসে এই সংখ্যা ছিল ৫৯। একই সময়ে বেড়েছে গণপিটুনির ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা। জুনে ৪১টি গণপিটুনির ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ৪৭ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আগের মাসে ৩৪টি ঘটনায় সাতজন নিহত ও ৩৮ জন আহত হয়েছিলেন। সোমবার প্রকাশিত মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) জুন মাসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন সমকালকে বলেন, মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে– বলার সময় এখনও আসেনি। মবসন্ত্রাস, ধর্ষণ, সংখ্যালঘু নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটছে। সংখ্যাগত দিক থেকে বলতে গেলে এটা বেড়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোয় জড়িতরা যাতে বিরত হয়, এমন কার্যকর বার্তা সরকার দিতে পারছে না।
এমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুনে ৩৬৩টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, যা গত মাসের তুলনায় ১০৫টি কম। তবে জুনে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে। ধর্ষণের শিকার ৬৩ জনের মধ্যে ১৯ শিশু ও ২৩ কিশোরী রয়েছে। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ২ শিশু, ৭ কিশোরী ও ৮ নারী। ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছে ১ কিশোরী ও ৩ নারী। ধর্ষণের চেষ্টা ছিল ২৭টি, যৌন হয়রানি ৩৯টি, শারীরিক নির্যাতনের ৫১টি ঘটনা ঘটেছে। জুনে ২১ কিশোরী, ২৬ নারীসহ মোট ৩৫ জন আত্মহত্যা করেছেন। অপহরণের শিকার হয়েছে ১ শিশু, ২ কিশোরী ও ১ নারী। এ ছাড়া ৩ শিশু, ৩ কিশোরী ও ৩ নারী নিখোঁজ রয়েছেন। জুনে ৩ শিশু, ৪ কিশোরী ও ৭ নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ মোট ৯২ শিশু, কিশোরী ও নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এর মধ্যে ৫৫ জন শিশু-কিশোরী রয়েছে।
এমএসএফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুনে গণপিটুনির ঘটনা বেড়েছে। গণপিটুনির শিকার ৩০ জনকে আহত অবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়। নিহতের মধ্যে দুইজনকে ডাকাতির অভিযোগে, তিনজনকে চোর সন্দেহে, একজনকে খুনের অভিযোগে এবং দুইজনকে চুরির অভিযোগে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া হত্যার অভিযোগে একজনকে, পাঁচজনকে ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে, তিনজনকে যৌন হয়রানির অভিযোগে, চারজনকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে, ১৭ জনকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী হওয়ার অভিযোগে, চারজনকে ডাকাতির অভিযোগে এবং সন্দেহজনক চুরি, চাঁদাবাজি, কটূক্তি, প্রতারণা ও অপহরণ– এ ধরনের কারণে ১৫ জনকে গণপিটুনি দেওয়া হয়।
মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, জুনে ৪৯টি অজ্ঞাতপরিচয় লাশ উদ্ধার হয়েছে। অল্পসংখ্যক ঘটনা ছাড়া সব লাশের পরিচয় অজ্ঞাতই থেকে যাচ্ছে। মে মাসে এর সংখ্যা ছিল ৫৫। এসব অজ্ঞাতনামা লাশের বেশির ভাগই নদী বা ডোবায় ভাসমান, মহাসড়ক বা সড়কের পাশে, সেতুর নিচে, রেললাইনের পাশে, ফসলি জমি ও পরিত্যক্ত স্থানে পাওয়া যায়।
এমএসএফের প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান বলেন, নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা রোধে দেশে যথেষ্ট কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও অপরাধ
দমন ও নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।