ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ইন্টারনেট এবং মোবাইল ব্যবহারে আত্মবিশ্বাস বাড়ে তরুণদের: গবেষণা

ইন্টারনেট এবং মোবাইল ব্যবহারে আত্মবিশ্বাস বাড়ে তরুণদের: গবেষণা

“অ্যাডোলেসেন্ট ভয়েস অ্যান্ড এজেন্সি থ্রো আইসিটি অ্যান্ড মোবাইল ইউজ” শীর্ষক ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারীরা

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২০ | ০৯:২০

বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীরা তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোনের বহুবিধ ব্যবহার করে থাকে। শুধু তাই নয় এর মাধ্যমে তারা বৈশ্বিক এবং স্থানীয় ঘটনাবলী জানতে পারে এবং নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সক্ষম হয়। ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া ৬৪ জন কিশোর-কিশোরীর ওপরে ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অফ গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট করা গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও সমাজের কিছু নির্ধারিত অংশের কিশোর-কিশোরীরাই এই সুবিধা পায়।

বৃহস্পতিবার গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির আয়োজনে “অ্যাডোলেসেন্ট ভয়েস অ্যান্ড এজেন্সি থ্রো আইসিটি অ্যান্ড মোবাইল ইউজ” নামক এক ওয়েবিনারে এই ফলাফল তুলে ধরা হয়। গবেষণার অর্থায়ন করেছে জেন্ডার অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্স গ্লোবাল অ্যাভিডেন্স (গেজ) রেসপন্সিভ রিসার্চ এবং ইভ্যালুয়েশান ফান্ড।  

ফোকাস গ্রুপ আলোচনা ও বিশদ সাক্ষাতকারে গবেষকরা দেখেছেন কিশোরীরা বিশেষত মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন আর্থ-সামাজিক এবং গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে বেড়ে উঠছে যারা, তারা তাদের বাবা-মা কিংবা ভাই-বোনের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। সেই ব্যবহারও বেশ সীমিত কারণ ফোনের মূল মালিকের ব্যবহারের মাঝ থেকেই তাদের সময় বের করে নিতে হয়। এই কিশোরীরা বাবা-মায়ের কঠোর নজরদারিতে থাকে বলে তাদের গতিবিধিও সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ ওয়াইফাই সুবিধা পেতে কিংবা মোবাইল ডাটা কিনতে তারা বাইরেও বের হতে পারে না।

ঢাকার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, তিনটি বাংলা মাধ্যম স্কুল, শহরের একটি বস্তি ও কুমিল্লার একটি গ্রামে ২০১৯ এর জুলাই থেকে ২০২০ এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই নিরীক্ষাটি করা হয়। এই নিরীক্ষার অংশ হিসেবে যেসব স্কুল শিক্ষক ও অভিভাবকদের সাক্ষাতকার নেওয়া হয়েছে তাদের মাঝেও একধরণের নেতিবাচকতা পাওয়া গেছে। এই অভিভাবকরা মনে করেন, তাদের সন্তানরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রেমের সম্পর্কে জড়াতে পারে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে শিক্ষাগ্রহণ করা যায় এমন কথা মানতেও তারা নারাজ। ফলে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা তাদের পিতা-মাতার নজরদারিতে বেশি থাকে। এমনকি শিক্ষকরাও মনে করেন ছেলেদের আইসিটি নিয়ে দক্ষতা ও আগ্রহ অনেক। তাই তারা ল্যাবে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের কম্পিউটার ব্যবহারের বেশি সুযোগ দেন।

ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আখতার বলেন, 'অ্যাকসেলারেটিং প্রোটেকশন ফর চিলড্রেন' প্রজেক্টের মাধ্যমে আমরা আমাদের শিশু কিশোরদের জন্য সেরাটা দিচ্ছি। এই প্রজেক্টের মূল বিষয়গুলো হলো- কিশোরদের ক্ষমতায়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি ও উন্নত সেবা, প্রয়োজনীয় নীতিমালা গঠন ও প্রচার, পর্যবেক্ষণ, নলেজ ম্যানেজমেন্ট এবং উন্নয়নের জন্য যোগাযোগকে ব্যবহার করা।

বিআইজিডির সিনিয়র ফেলো অব প্র্যাকটিস মাহিন সুলতান বলেন, ২০১৮ সালে যখন আমরা ঢাকার বস্তি এলাকায় কিশোর-কিশোরীদের জীবন ও পরিবর্তনের ধারা নিয়ে গবেষণা করছিলাম, তখন বুঝতে পারলাম, কিশোর-কিশোরীদের জীবনের এ সময়ে মোবাইল ফোন ও আইসিটি নিয়ে গবেষণার জন্য অনেকখানি গুরুত্ববহ।

সভাপতির বক্তব্যে বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন বলেন, 'অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাইজেশন বা, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে ডিজিটাইজেশনকে ঘিরে আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ পদক্ষেপ নিয়েছি। যেখানে আমরা সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণার দৃষ্টিকোণ দিয়ে দেখতে চাই ডিজিটাল বাংলাদেশের যে স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমরা লালন করি, তা মানুষের জীবনে যেন সঠিকভাবে উপকার বয়ে আনে।'

ওয়েবিনারে গবেষণালব্ধ ফলাফল উপস্থাপন করেন বিআইজিডির রিসার্চ ফেলো লপিতা হক।  এতে উপস্থিত ছিলেন বিআইজিডির সিনিয়র উপদেষ্টা মোশাররফ হোসেন ভুইয়া, গেজ এর গবেষক সিলভিয়া গুগলিয়েমি, আইসোশ্যাল-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. অনন্য রায়হান, স্যার জন উইলসন স্কুলের প্রিন্সিপাল সাবরিনা শহীদ প্রমুখ।

আরও পড়ুন

×