ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া বেরোলেই গ্রেপ্তার: ডিএমপি কমিশনার

যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া বেরোলেই গ্রেপ্তার: ডিএমপি কমিশনার

মোহা. শফিকুল ইসলাম। ছবি: ফাইল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২১ | ১০:৪৪

লকডাউনে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কেউ বের হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হবে। 

পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে। বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে এবার দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে পুলিশ, যা এর আগে কখনও করা হয়নি। এই ধারার মামলায় সর্বোচ্চ ছয় মাসের সাজা, জরিমানা বা উভয়দণ্ড হতে পারে। নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমনও হতে পারে, প্রথম দিনই হয়তো পাঁচ হাজার লোক গ্রেপ্তার হবে।

লকডাউন কার্যকরে পুলিশের অবস্থান জানাতে বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকার পুলিশ প্রধান বলেন, পুলিশ শক্ত অবস্থানে থাকবে বলেই আপনারা নিরাপদে থাকবেন। সর্বাত্মক লকডাউনে ডিএমপির বিভিন্ন ইউনিটের উপকমিশনাররা সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন।

তিনি বলেন, লকডাউনে শপিং মল, কমিউনিটি সেন্টার, মার্কেট, দোকানপাট বন্ধ থাকবে। অলিগলির সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার ও কাঁচাবাজার খোলা থাকবে। ভিড় এড়াতে কাঁচাবাজার উন্মুক্ত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রয়োজনে রিকশা ব্যবহার করে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজারে কেনাকাটা করা যাবে। তবে ব্যাটারিচালিত রিকশা বা যন্ত্রচালিত কোনো গাড়ি চলাচল করবে না। গণমাধ্যমকর্মীরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে যন্ত্রচালিত বাহনে চলাচল করতে পারবেন। কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি চলাচলে কোনো অসুবিধা নেই। বিদেশগামীরা তাদের ভ্রমণের টিকিট ও পাসপোর্ট দেখিয়ে গাড়ি ব্যবহার করে যাতায়াত করতে পারবেন। তবে বিদেশ থেকে আসা কাউকে আনতে গেলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হবে। বক্তব্যে সন্তুষ্ট হলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেবে, নইলে আইনের আওতায় আনা হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, এবার মুভমেন্ট পাস থাকছে না। চলবে না ব্যক্তিগত গাড়ি। রিকশায় সংক্রমণের ঝুঁকি কম বলে তা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে রিকশায় কেউ পরিবার নিয়ে বেড়াতে বের হতে পারবে না। শিল্পকারখানার মালিকরা তাদের গাড়িতে চলতে পারবেন না, রিকশায় যেতে হবে। জরুরি সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে যাতায়াতের সুবিধা না পেলে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন।

তিনি জানান, করোনা পরীক্ষার জন্য যেতে হলে মোবাইল ফোনে আসা এসএমএস দেখাতে হবে। ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দেখিয়ে ফার্মেসিতে যাওয়া যাবে। তবে যন্ত্রচালিত বাহনে নয়। খাবারের হোটেল খোলা থাকবে, তবে হোটেলে বসে খাওয়া যাবে না। খাবার কিনে নিয়ে আসতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার জানান, সব ধরনের ক্লাব-বার বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে তর্কবিতর্কে জড়িয়ে হয়তো ফাঁকি দিতে পারবেন, ভিডিও ভাইরাল করে পুলিশকে সমালোচনার মুখে ফেলতে পারবেন, তবে পরিবার ও সন্তানকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে দূরে রাখতে পারবেন না।

তিনি জানান, ঢাকা মহানগরীর প্রধান সড়কসহ অলিগলিতে পুলিশি টহল বাড়ানো হবে। ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় চেকপোস্ট জোরদার করা হবে। বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় পুলিশের সহায়তা থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) কৃষ্ণপদ রায়, অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার, সিটিটিসির অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান ও যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মাহবুব আলম প্রমুখ।

আরও পড়ুন

×