হত্যার পর ৯৯৯-এ ফোন
'মরদেহ ঘরে আছে, পুলিশ পাঠান'

ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৮:২০ | আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৮:২০
রাজধানীর উত্তরখানে ৩৯ বছর বয়সী নারীকে খুন করার পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন অটোরিকশা চালক হযরত আলী (৪৭)। হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, 'আমি স্ত্রীকে (আসলে স্ত্রী নন) খুন করেছি। মরদেহ ঘরে আছে, পুলিশ পাঠান।' খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হযরত আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনাটি মঙ্গলবার রাতের।
উত্তরখান থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ সমকালকে বলেন, বুধবার হযরত আলীকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। নিহত নারী পোশাক শ্রমিক রাশেদা তাঁর স্ত্রী নন। রাশেদার সঙ্গে তাঁর অনৈতিক সম্পর্ক চলছিল এক বছর ধরে। খুনের আগেও তাঁর সঙ্গে মেলামেশা করেন। বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় তিনি শিলপুতা দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করেছেন।
পুলিশ জানায়, হযরত আলী তিনটি বিয়ে করেছেন। তবে কোনো স্ত্রীর সঙ্গেই তাঁর সম্পর্ক টেকেনি। উত্তরখানের চানপাড়ার বিল্লাল হাজির আধাপাকা বাড়ির একটি ঘরে ভাড়া থাকতেন। গ্রামের বাড়ি শেরপুরের শ্রীবর্দী থানার বেলুয়াচাঁন মঙ্গলবাড়ীতে। রাশেদার গ্রামের বাড়িও ওই জেলায়। রাশেদা রিকশাচালক স্বামী আব্দুর রশিদের সঙ্গে উত্তরখানের বড়বাগ কুড়িপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁদের দুই সন্তান। বড়বাগ থেকে চাঁনপাড়ার দূরত্ব আনুমানিক তিন কিলোমিটার। হযরত আলী মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাশেদাকে ফোন করে নিজ বাসায় ডাকেন। শারীরিক সম্পর্ক হয় তাঁদের। এর পর রাশেদাকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু বিয়ে করতে রাজি হননি রাশেদা। এ নিয়ে তর্ক বাঁধে। এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় ঘরে থাকা পানের লোহার ছেঁচুনি দিয়ে রাশেদার মাথায় আঘাত করেন। রাশেদা নিস্তেজ হয়ে পড়েন। এর পর শীলপুতা দিয়ে মাথায় আঘাত করতে থাকেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহের পাশে বসেই তিনি ৯৯৯-এ ফোন করে খুনের খবর দেন। পুলিশ যখন ওই বাসায় পৌঁছায় তখন ঘরের দরজা ভেতর থেকে আটকানো ছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দরজা খুলে নিজেই ধরা দেন পুলিশের কাছে।
গ্রেপ্তারের পর হযরত আলী হত্যার কথা স্বীকার করে বলেন, সম্প্রতি অন্য ব্যক্তির সঙ্গে রাশেদার সম্পর্ক হয়। এ কারণে তিনি দ্রুত তাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন।
হযরত আলীর প্রতিবেশী কোরবান আলী জানান, তিনি হযরত ও রাশেদার মধ্যে বিয়ে নিয়ে ঝগড়া করতে শুনেছেন। এটি তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয় ভেবে তিনি ঝগড়া মেটাতে যাননি।
মরদেহ উদ্ধার করে আজ সকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা শিলপুতা ও পানের লোহার ছেঁচুনি উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় নিহতের স্বামী আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
- বিষয় :
- মরদেহ
- পুলিশ
- জাতীয় জরুরি সেবা