ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

বিএমইটির সেই সাকাওয়াতের শাস্তি শুধু ইনক্রিমেন্ট স্থগিত

বিএমইটির সেই সাকাওয়াতের শাস্তি শুধু ইনক্রিমেন্ট স্থগিত

বকুল আহমেদ

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৩ | ০০:৫৯ | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৩ | ০০:৫৯

অবৈধভাবে সরকারি গাছ বিক্রি, দানবাক্স খুলে টাকা আত্মসাৎসহ নানাভাবে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে কোনো সরকারি কর্মকর্তার কঠোর শাস্তি হওয়ার কথা।

তবে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) প্রশিক্ষণ পরিচালনা শাখার সাবেক পরিচালক প্রকৌশলী ড. সাকাওয়াৎ আলীর ভাগ্য প্রসন্ন। সরকারি তদন্তে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলেও তাঁর হয়েছে ‘লঘুদণ্ড’।  

শাস্তি হিসেবে তাঁর বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তাঁকে এই লঘুদণ্ড দিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। বর্তমানে বিএমইটির চাঁদপুরের ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির (আইএমটি) অধ্যক্ষ তিনি। এই দুই কর্মস্থলের আগে তিনি দীর্ঘ সাড়ে আট বছর রাজধানীর দারুসসালাম এলাকায় বাংলাদেশ কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিকেটিটিসি) অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তাঁর অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে ২০২১ সালের শুরুর দিকে সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর গঠিত তদন্ত কমিটি এসবের প্রমাণ পায়। তখন তিনি (বিএমইটি) প্রশিক্ষণ পরিচালনা শাখার সাবেক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বিকেটিটিসিতে থাকার সময়ে তিনি ভবনের বিভিন্ন স্থানে এবং শ্রেণিকক্ষে মসজিদের নামে একাধিক দানবাক্স রাখতেন। সেখানে বিদেশগামী শ্রমিকদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষ হলে সাকাওয়াৎ তাদের বলতেন, বিদেশে যাওয়ার আগে মসজিদের দানবাক্সে টাকা ফেললে বরকত পাওয়া যাবে। একপর্যায়ে তাদের বাধ্য করতেন দানবাক্সে টাকা দিতে। দানবাক্সের বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। বিকেটিটিসি চত্বরে সরকারি গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন এই কর্মকর্তা। রাজধানীর দারুসসালাম এলাকায় তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি সমকালে প্রকাশিত ‘গাছ, দানবাক্স কিছু্‌ই ছাড়েননি সাকাওয়াৎ’ শিরোনামে প্রতিবেদনটির বিষয়ে সাকাওয়াতের বিরুদ্ধে আনীত বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। সাকাওয়াৎ সরকারি বিধিবিধান উপেক্ষা করে সরকারি ছোট-বড় ৩০টিরও বেশি গাছ বিক্রির অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা করেননি। তিনি বিকেটিটিসি-সংলগ্ন নির্মাণাধীন ডিটিটিটিআই নামের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে প্রকল্পের বিদ্যুৎ বিল নিয়ম ভেঙে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের রাজস্ব খাত থেকে পরিশোধ করেছেন। অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর চালানের মাধ্যমে আংশিক টাকা জমা দিয়েছেন।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, বিভাগীয় মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো পর্যালোচনায় অভিযুক্ত সাকাওয়াতের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী ‘অসদাচরণের’ অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাঁর বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হলো।

আরও পড়ুন

×