সড়কের জায়গা দখল করে ২৫ দোকান
রায়েরবাজার বধ্যভূমি

রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমির পশ্চিম সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে নির্মাণসামগ্রীর দোকান। ছবি: সমকাল
হকিকত জাহান হকি
প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৪ | ০৬:৩১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে রায়েরবাজার বধ্যভূমির পশ্চিম সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে ইট, বালু, রড, সিমেন্ট, বাঁশ ও কাঠের অনেক দোকান। সব দোকানই সড়কের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে। সরকারি এই জায়গা ভাড়া দিয়েছে স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র। জায়গাটি দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন এলাকার লোকজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দখল হওয়ায় রায়েরবাজার বধ্যভূমির পাশের সড়কটি সংকুচিত হয়ে পড়েছে। প্রভাবশালী চক্রটি সরকারি জায়গায় দোকান বানিয়ে নিজের বাড়ির মতো ভাড়া দিয়েছে। মাসিক ভাড়া ছাড়াও দোকানিদের কাছে অগ্রিম বাবদ নেওয়া হয়েছে মোটা টাকা। এভাবে মাসে মাসে মোটা অঙ্কের টাকা হাতাচ্ছে তারা।
দখল হওয়া জায়গাটির উত্তরে ট্রাফিক পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনারের কার্যালয়, দক্ষিণে র্যাব-২-এর সদরদপ্তর। আর পশ্চিমে ঢাকার পশ্চিমাঞ্চল পুলিশ লাইন্স। এর মধ্যেই সরকারি জায়গা দখল করে ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সরকারের কোনো সংস্থাই দখল হওয়া জায়গাটি উদ্ধারে এগিয়ে আসছে না।
দখল হওয়া জায়গাটিতে দোকান রয়েছে ২৫টি। এর মধ্যে ১৭টি দোকানে বিক্রি হয় ইট, বালু ও ইটের খোয়া। চায়ের দোকান রয়েছে দুটি, আর বাঁশ ও কাঠের দোকান ছয়টি। প্রতিটি দোকান থেকে মাসে ভাড়া নেওয়া হয় ১০ হাজার টাকা। এই হিসাবে ভাড়া থেকে প্রতি মাসে আসে আড়াই লাখ টাকা। এ ছাড়া স্থানীয় থানা পুলিশ প্রতিদিন দোকানপ্রতি এক হাজার টাকা নেয় বলে জানান দোকানিরা। এর বাইরে সড়কের ময়লা পরিষ্কারের জন্য প্রত্যেককে দৈনিক দিতে হয় ৫০০ টাকা। ওয়াসার অবৈধ লাইনের পানি ব্যবহারের জন্য দিতে হয় আরও ৫০০ টাকা। প্রতি দোকানের জন্য ভাড়া ছাড়াও ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম দিতে হয়েছে বলে জানান দোকানিরা।
এখানে দোকান ভাড়া নিয়ে যারা ব্যবসা করছেন তাদের কয়েকজন হলেন– আবদুর রব (হক ড্রাইভার), মো. সম্রাট, মো. ফয়েজ, মো. সোবহান, মো. কামাল, মো. মান্নান (ময়না), নসু মিয়া, মো. সেলিম, মো. কবীর, মো. জহির, মো. মামুন, আল আমিন, রাকিব, নূর ইসলাম, মো. মিরাজ, মোল্লা, মো. খোকন, মো. কামাল, কামরুল দারোগা ও মো. কামাল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দোকানি জানান, ২০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে তিনি ৪০ ফুট জায়গা ভাড়া নিয়েছেন। এ ছাড়া জায়গার ভাড়া ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রতিদিন তাঁকে দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। দোকানিরা জানান, মাসের ২০ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে চক্রের সদস্য মো. সাইফুল ভাড়ার টাকা নিতে আসেন। চক্রের সদস্যরা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে জানান তারা।
- বিষয় :
- বধ্যভূমি