ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র এখন নির্বাচনের আগের অবস্থানে নেই: পরিবেশমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্র এখন নির্বাচনের আগের অবস্থানে নেই: পরিবেশমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪ | ১৮:২৯ | আপডেট: ১৫ মে ২০২৪ | ১৮:৩৯

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র নেই বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের এমন কিছু বিষয় আছে, যেগুলো অভিন্ন। আবার কিছু বিষয়ে তাদের মতের ভিন্নতা থাকতে পারে। যেমন বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের আগে তাদের অস্বস্তি ছিল। নির্বাচন নিয়ে তাদের যে অবস্থান ছিল এখন সেই অবস্থান নেই। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক কীভাবে আরও সুদৃঢ় করা যায়, তা নিয়ে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

বুধবার সকালে সচিবালয়ে সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ডোনাল্ড লু। বৈঠক শেষে প্রথমে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে এই বৈঠকের বিষয় নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশমন্ত্রী।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ডোনাল্ড লুর সঙ্গে অতীত নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। বর্তমান সম্পর্ককে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে দুই দেশ কীভাবে কাজ করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে পরিবেশ ও বন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী তিন, চার, পাঁচ বছরে দীর্ঘ মেয়াদে কী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বহুপক্ষীয় সংস্থা এমডিবি কীভাবে অর্থায়ন করবে, তা বড় একটি বিষয়। আগে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় চাহিদা ছিল বিলিয়ন ডলার। এখন তা ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। সরকার এখন গবেষণার ওপর জোর দিচ্ছে।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, এসব বিষয় নিয়ে ভবিষ্যতে আবার বসবেন। তখন সবকিছু সুনির্দিষ্ট হবে। কোন কোন খাতে সহযোগিতা হবে, তা নির্ধারণ করা হবে। ডোনাল্ড লু জোর দিয়েছেন, ভবিষ্যতে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যা-ই বিনিয়োগ হোক, তা যেন প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার একই জায়গায়। সেটি হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। এ বিষয়ে কীভাবে কাজ করা হবে, কৌশল কী হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ার জন্য বিনা মূল্যে রিয়াল টাইম স্যাটেলাইট ডেটা অফার করার পরিকল্পনা করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, দূষণ, এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির মতো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলি পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হবে।  বাংলাদেশ প্রযুক্তি হস্তান্তর, সক্ষমতা বৃদ্ধি, স্মার্ট এগ্রিকালচার এবং সবুজ ও জলবায়ু প্রযুক্তির অগ্রগতি, অর্থায়নে সহায়তা কামনা করা হয়েছে। এসকল লক্ষ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠিত হবে। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের কল্যাণ নিশ্চিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও আলোচনা করা হবে।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে তারা কীভাবে আমাদের সহযোগিতা করবে সে বিষয়ে আমরা কথা বলেছি।  আমি আশাবাদী যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় তারা আমাদের চাহিদার কথা মাথায় রাখবে। তিনি বলেন, আলোচনায় পরিবেশগত ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।

ডোনাল্ড লু সাংবাদিকদের বলেন, পরিবেশমন্ত্রীর সঙ্গে তার চমৎকার আলোচনা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দুই দেশ কীভাবে কাজ করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অবশ্য এর বাইরে আর কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি ডোনাল্ড লু।

বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর চিফ অব স্টাফ নাথানিয়েল হাফ্ট, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরো অফিসের রাজনৈতিক ইউনিট প্রধান সারাহ অলড্রিচ, ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক কাউন্সেলর আর্তুরো হাইন্স, ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল ইউনিট চিফ শেরিন ফিটজেরাল্ড এবং ঢাকাস্থ  মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল অফিসার ম্যাথু বেহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

আরও পড়ুন

×