এভারেস্টজয়ী বাবর আলীকে সংবর্ধনা দিল এভারেস্ট ফার্মা

রোববার রাজধানীতে এভারেস্টের প্রধান কার্যালয়ে বাবর আলীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়- সমকাল
হাসান জাকির
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪ | ১৬:২৫ | আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪ | ১৯:১০
এভারেস্ট ও লোৎসেজয়ী বাবর আলীকে সংবর্ধনা দিয়েছে এভারেস্ট ফার্মা। রোববার রাজধানীতে এভারেস্টের প্রধান কার্যালয়ে সংবর্ধনা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানে সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ খান, এভারেস্টজয়ী ডা. বাবর আলী, এভারেস্ট ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির হোসেন, পরিচালক (ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট) অঞ্জন মল্লিক, সমকালের জিএম মার্কেটিং ফরিদুল ইসলাম, সানিডেল স্কুলের পরিচালক (স্পোর্টস) মো. মিজানুল ইসলাম, ফার্মাসিস্ট সালেহিন আর্শাদি প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে বাবর আলী বলেন, ছোটবেলায় বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যয়ের ‘চাঁদের পাহাড়’ এবং সমরেশ মজুমদারের ‘গর্ভধারিণী’ পড়ে আমার ভেতর পাহাড় জয়ের স্বপ্ন তৈরি হয়। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে ক্যারিয়ারের সঙ্গে আপোষ করতে হয়েছে। আর্থিক ক্ষতির মুখেও পড়েছি। আমি আসলে চল্লিশ পঞ্চাশ লাখ টাকা হলে গাড়ি কিংবা ফ্ল্যাট কিনব এরকম চিন্তা করি না। নিজের স্বপ্নকে ছুঁতে সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করছি। এ মিশনে এভারেস্ট ফার্মা কোনো প্রত্যাশা না রেখেই আমার পাশে দাঁড়িয়েছে, এজন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এটা একান্তই ব্যক্তিগত অর্জন, তবে যখন আমি এভারেস্ট শৃঙ্গে আরোহণ করেছি তখন প্রথমেই আমি দেশের পতাকা উঁচু করে ধরেছি। আগামীতে অন্যান্য আট হাজারী শৃঙ্গে আরোহনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি বলেন, সবারই এভারেস্ট জয় করার দরকার নেই। তবে প্রত্যেকের ভেতরেই একটা এভারেস্ট আছে, সেটাকেই ছুঁতে হবে। সেই এভারেস্ট ছোঁয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ খান বলেন, ১৯৫৩ সালে প্রথম এডমন্ড হিলারি ও তেনজিং নোরগে এভারেস্ট জয় করেন। এরপর পৃথিবীর নানা দেশের অনেকেই এভারেস্ট জয় করেছেন। এ সময়ে আমরা কেউ এভারেস্ট জয় করতে পারিনি। স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত ছয় ছয়জন বাংলাদেশি এভারেস্ট জয় করলেন। এই বিজয়ের সঙ্গেও স্বাধীনতার সম্পর্ক রয়েছে। এই স্বাধীনতার জন্য যারা রক্ত দিয়েছেন শহীদ হয়েছেন তাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকা কিন্তু তারা এভারেস্ট চূড়ায় উড়িয়েছেন। আমরা তাদের জন্য গর্বিত যারা এভারেস্টের শীর্ষে চড়ে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন। বাবর আলীকেও ধন্যবাদ আর কতৃজ্ঞতা জানায় যে তিনি শুধু এভারেস্ট জয় করে থেমে থাকেননি, প্রথমবারের মতো দুটি শীর্ষ পর্বত একসঙ্গে জয় করেছেন। আশা করছি, তিনি অন্যগুলোও আগামীতে জয় করবেন। আর এ ধরনের উদ্যোগের সঙ্গে এভারেস্ট ফার্মা যুক্ত হওয়ায় তাদেরও ধন্যবাদ জানাই। তারাও আগামীতে ওষুধ শিল্পের এভারেস্টে আরোহণ করবে।
এভারেস্ট ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন, আমাদের শিশুরা মাঠে খেলাধুলার পরিবর্তে মোবাইল ফোনে বেশি সময় ব্যয় করছে। এটা সত্যিই ক্ষতিকর। শিশুদের মধ্যে স্পোর্টিং মানসিকতা জাগিয়ে তুলতে হবে, তাদের খেলার মাঠে নিতে হবে। এভারেস্ট চূড়া জয় করাও এক ধরনের স্পোর্টস। এটার জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতি প্রয়োজন। যেটা অজেয়, সেটাকে জয় করলেই মানসিক দূঢ়তা তৈরি হয়, আনন্দ হয়। বাবর আলীও আমাদের সেই আনন্দের ভাগিদার করেছেন। আমরা এ ধরনের উদ্যোগের সঙ্গে সব সময়ই থাকতে চাই।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা বাবর আলীর হাতে ক্রেস্ট ও সম্মননা তুলে দেন।
উল্লেখ্য, বাবর আলীর আগে লোৎসেতে ইতোপূর্বে কোনো বাংলাদেশি সামিট করেননি এবং কোনো বাংলাদেশি একই অভিযানে দুটি আট হাজারী শৃঙ্গে আরোহণ করেননি।
- বিষয় :
- এভারেস্ট জয়
- সংবর্ধনা
- বাবর আলী