দলিত জনগোষ্ঠী বৈষম্য বঞ্চনা থেকে মুক্তি চায়
ঢাকায় সমাবেশে ১২ দফা দাবি

ছবি: সংগৃহীত
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২০:২৫
দেশের পিছিয়ে পড়া অবহেলীত বঞ্চিত দলিত গোষ্ঠী সমাজের শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তি চায়। তারা সমাজের আরও অন্য মানুষের মতো স্বাভাবিক জীবন চায়। সংবিধানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকারের কথা বলা হলেও তাদেরকে নিম্ন জাতের মানুষ মানুষ হিসেবে প্রতিনিয়ত ঘৃণার চোখে দেখা হয়।
দলিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি বিদ্যমান সব প্রকার বৈষম্য অবসানের দাবিতে এক সমাবেশে বক্তারা ওই দাবি জানান।
শনিবার ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম) ও নাগরিক উদ্যোগে ওই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিডিইআরএমের সভাপতি উত্তম কুমার ভক্ত। সঞ্চালনা করেন, বিডিইআরএম সাধারণ সম্পাদক শিপন কুমার রবিদাস। এ সময় বিভিন্ন দল, সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, জন্ম ও পেশাগত কারণে দেশে প্রায় ৭৫ লাখ দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। শিক্ষা, সামাজিক মর্যাদা, লিঙ্গ সমতা এবং সমঅধিকার ভোগের দিক দিয়ে নিচুস্তরের মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যা সঙবিধান পরিপন্থি। সুনির্দিষ্ট কোনো বিধি-বিধান না থাকায় ভুক্তভোগী ব্যক্তির পক্ষে আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করা কঠিন। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও তারা সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেননি।
তাদের ১২ দফা হলো- বৈষম্য বিরোধী বিল-২০২২ সংশোধন করে অবিলম্বে পাস করতে হবে; পুনর্বাসন ছাড়া দলিত কলোনী/পল্লী উচ্ছেদ করা চলবে না; জনপরিসরে দলিতদের প্রবেশাধিকারে বাধা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; তাদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে; সকল পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের চাকরি স্থায়িত্বকরণসহ সুনির্দিষ্ট পে-স্কেল দিতে হবে; সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় দলিতদের জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে; বৈষম্য নিরসনে বিভিন্ন পর্যায়ে সংরক্ষণ নীতি চালু করতে হবে।
এছাড়া দেশের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পেশাগত স্বাস্থ্যঝুঁকি নিরসনে সুরক্ষা উপকরণ সরবরাহ করতে হবে; কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না- সংবিধানের এই ধারার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে; ভূমিহীন দলিত জনগোষ্ঠীর জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খাসজমির বন্দোবস্ত করতে হবে; সব পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য মহানগর ও পৌরসভায় আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে ও স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন কমিটিতে দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতা দীপায়ন খীসা, দলিত নারী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনি রানী দাস, বিডিইআরএম ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতি গগণ লাল, বিডিইআরএম কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক তামান্না সিং বাড়াইক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লুনা নূর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন কণা প্রমুখ।
- বিষয় :
- দলিত জনগোষ্ঠী
- সমাবেশ